বরিশালে ইউএনওর মামলায় বিসিসি মেয়রসহ ২৮ নেতা নির্দোষ
বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে ইউএনওর ওপর হামলাচেষ্টা এবং আনসার সদস্যদের ওপর হামলা ও গুলির মামলায় মেয়রসহ কোনো আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ। সোমবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন।
পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলার তদন্তের ভার ছিল কোতোয়ালি মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেনের ওপর। আনোয়ার বদলি হয়ে গেলে ১৯ নভেম্বর থেকে এই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে তিনি ২৮ আসামির মধ্যে কারও বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাননি।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, ‘গত ৬ ডিসেম্বর ইউএনওর করা মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জমা দেওয়া হয়। কারও পক্ষে গিয়ে নয় বরং তদন্তে যা পেয়েছি সেভাবেই প্রতিবেদন দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তাই তাদের এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ শনাক্ত হলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে।’
পুলিশের প্রতিবেদনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ আগস্ট বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের কথা-কাটাকাটি হয়। স্বপনের সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে উপস্থিত আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় আনসার সদস্যরা গুলি ছুঁড়লে স্বপনসহ চারজন আহত হন। পরে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ফের ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় ইউএনও মুনিবুর রহমান বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ ২৮ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
/এএন