ফেনীতে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিএনপির মিছিল
ফেনীতে ১৪৪ ধারা জারি
তবে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে শহরের রামপুর তাকিয়া রোডে বিএনপিকে মিছিল, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি করতে দেখা গেছে। এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
অপরদিকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদেরও অবস্থান করতে দেখা গেছে। উভয় রাজনৈতিক দলের অবস্থানের কারণে ফেনীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উভয়পক্ষ থেকে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ওয়াপদা মাঠকে সভার স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে। জেলা বিএনপির আয়োজনে দুপুর ২টা সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। অপরদিকে জেলা যুবলীগ দুপুর ১২টায় একই স্থানে কর্মীসভা আহ্বান করেছে।
ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জেলায় মহাসমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। এর আগে জেলা প্রশাসনের নিকট সভার অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়। তাতে শহরের মিজান ময়দান, ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর অথবা শহরের ট্রাংক রোডে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের বিকল্প স্থানের অনুমতি চাওয়া হয়। পরে অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় সভা করার জন্য স্থান হিসেবে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ওয়াপদা মাঠ ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়।
কিন্তু ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল হাজারীর আকস্মিক মৃত্যু ও মঙ্গলবার বিকালে অনুষ্ঠিত জানাযার জন্য বিএনপির সমাবেশের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরে ওইদিনের সমাবেশ বুধবার দুপুর ২টায় ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসন থেকে সভার পূর্ব অনুমতির জের ধরে আবারও জেলা প্রশাসনের নিকট বুধবার সভা করার জন্য দরখাস্ত দেওয়া হয়।
তিনি জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, 'বিএনপির সভা ভণ্ডুল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে একই স্থানে জেলা যুবলীগ কর্মীসভা ডেকেছে। তা সত্ত্বেও বিএনপি সমাবেশ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল। প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি সমাবেশ করবে না। পরবর্তীকালে প্রশাসনের কাছে আবার অনুমতি চাইব।'
এদিকে ফেনী জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজীব চৌধুরী জানান, তারা বুধবার দুপুর ১২টায় শহরের ওয়াপদা মাঠে কর্মীসভা আহ্বান করেছে। সভা অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসনের নিকট অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যদি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করব না। প্রশাসনের প্রতি আমরা সবসময় শ্রদ্ধাশীল। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আমরা কোনো প্রোগ্রাম ডাকিনি। আমরা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ডাক দিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান জানান, বিএনপিকে মঙ্গলবার ওয়াপদা মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে সভা স্থগিত করা হয়। বুধবার সভা করার জন্য আবারও জেলা প্রশাসনের নিকট তারা আবেদন করেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের মতামত চেয়ে তা পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, বুধবার দুপুরে ওই মাঠে সভা করার জন্য জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকেও আবেদন করা হয়েছে। তাদেরকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারপরও অনুমতি না নিয়ে যদি উভয়পক্ষ একই মাঠে সভা করার চেষ্টা করে এবং উত্তেজনা ও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
টিটি/