ভোট দিলেন ১১০ বছর বয়সী নারী
পুত্রবধূ আর প্রতিবেশি এক নারীর সহায়তায় কেন্দ্রে এসেছেন শতবর্ষী জোবেদা বেওয়া। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া দেহ, লাঠি হাতে ঠেস দেওয়ার চেষ্টা করে ধীর পায়ে প্রবেশ করেন ভোট কক্ষে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে খুশি মনে যখন বের হচ্ছেন তখন সাহায্যে এগিয়ে এলেন পুলিশ ও আনসার সদস্য। তারাই পথ এগিয়ে দিলেন শতবর্ষী এই নারীর। জোবেদা বেওয়ার চোখে মুখে তখন তৃপ্তির আভা।
চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিম খাঁ ইউনিয়নের মনিডাকুয়া দাখিল মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ১১০ বছর বয়সী জোবেদা বেওয়া। ওই ইউনিয়নের ফারাজিপাড়ার মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী তিনি।
এত বয়সে কেন্দ্রে কেন এসেছেন, এমন প্রশ্নে শতবর্ষী এই নারী বলেন, ‘যতদিন বাঁচি থাকিম, ততদিন ভোট দিবার আসিম বাহে! বাহে মোর জন্যে দোয়া করেন, বাঁচি থাকলে আরও যেন ভোট দিবার পাং বাহে।’
জোবেদা বেওয়ার পুত্রবধূ ফাতেমা বেগম (৪৫) জানান, সকাল থেকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অস্থির ছিলেন শ্বাশুড়ি জোবেদা বেওয়া। তিনি একা চলাফেরা করতে পারেন না বলে তাকে ধরে নিয়ে আসতে হয়েছে। ভোট দেওয়া জোবেদা বেওয়ার কাছে একটি আনন্দের ব্যাপার।
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা জাতীয় নির্বাচন কোনোটিতেই ভোট দেওয়া বাদ দেন না আমার শাশুড়ি। ভোট দেওয়া যে তার অধিকার এটি তিনি ভালো করেই বুঝেন এবং আনন্দের সঙ্গে ভোট দেন। ব্যাপারটি আমাদেরও ভালো লাগে, আমরাও ভোট দিতে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাই।’
ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য ইসমাইল হোসেন জানান, জীবনে ভাবতে পারিনি ১১০ বছরের এই নারী ভোট দিতে আসবে। তাকে ভোট দেওয়া ও ভোট শেষে সহযোগিতা করতে পেরে ভালো লাগলো। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখে।’
মনিডাকুয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার উজ্জ্বল কুমার রায় জানান, ওই কেন্দ্রে মোট এক হাজার ৬৫২ ভোট রয়েছে। রবিবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে যার বেশিরভাগ নারী ভোটার।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার সাত ইউনিয়নের মোট ৭৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাত ইউনিয়নে মোট ৪০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
/এএন