মোহনগঞ্জে মডেল মসজিদের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ছাদ থেকে পড়ে নান্টু মিয়া (৫৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশে খবর না দিয়ে রাতেই মৃতদেহ দাফন করায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পৌরশহরের কাজিহাটী এলাকায় নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ছাদ থেকে পড়ে এ ঘটনা ঘটে।
তবে পুলিশে খবর না দিয়ে রাতেই তাকে পৌর গোরস্থানে দাফন করা হয়। স্থানীয় অনেকেই নান্টুর জানাজায় উপস্থিত হলেও তাদের কেউই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানে না।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অন্যদের নিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে নান্টুর পরিবারকে ক্ষতিপূরণবাবদ কিছু টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশে খবর না দিয়ে মৃতদেহটির দ্রুত দাফন করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে, নান্টু ১৫-১৬ বছর আগে পরিবারসহ হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছেন। তার স্ত্রী ও দুই কন্যা রয়েছে। নান্টুর বাড়ি উপজেলার বড়কাশিয়া গ্রামে।
মডেল মসজিদে কর্মরত শ্রমিক নিজাম মিয়া বলেন, আমার প্রায় ৩০ জন শ্রমিক মডেল মসজিদে কাজ করি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইফতারের একটু আগে কাজ করার সময় মসজিদের তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে যান নান্টু। রোজা রেখে কাজ করছিলেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়।
রাতে জানাজা শেষে গোরস্থানে নান্টুকে দাফনকালে পশুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, নান্টু আমার আত্মীয়।
নান্টুর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত এসে জানাজা সামিল হয়েছি। কিভাবে মৃত্যু হয়েছে জানি না। মসজিদের ছাদের ওপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে, এটা প্রথম আপনার কাছ থেকে জানলাম।
স্থানীয় কাউন্সিলর সাজ্জাদুল আলম শিবলী বলেন, শুনেছি, নান্টুর পরিবারকে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এমন আশ্বাসেই পুলিশে খবর না দিয়ে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
মডেল মসজিদের তদারকির দায়িত্বে থাকা সাইট ম্যানেজার মারুফ বলেন, নান্টুর মৃত্যুর বিষয়টি তার পরিবারের সাথে মিমাংসা করা হবে। তবে ঠিকাদারের বিষয়ে নাম-ঠিকানা বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। পুলিশকে না জানানোর কারণ ও কিভাবে কী ঘটলো খোঁজ নিয়ে দেখছি।
প্রসঙ্গত, গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মোহনগঞ্জ মডেল মসজিদের কাজ শুরু হয়। ১৫ মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চার বছরেও তা শেষ হয়নি। এ কাজের বরাদ্দ ১১ কোটি ৬৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
এমএসপি