মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, ঋণের দায়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে জেলেরা
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দশ হাজারের বেশি জেলে তেঁতুলিয়া আর বুড়াগৌরঙ্গ নদীতে মাছ শিকার করে বেলা শেষে মাছ-ভাতে আহার করতেন। আজ তারা নুন-ভাতে দিন পার করছেন। টানা দুই মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন জেলেরা।
দীর্ঘদিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় কর্মহীন জেলেরা মহাজনের দাদন আর এনজিওর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কয়েক মাস সরকারি চাল না পাওয়ার অভিযোগ তুলে হতাশার কথা জানিয়েছেন অনেক জেলে পরিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইলিশ অভয়াশ্রমে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে এবং ইলিশের টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ১ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন উপজেলার জেলে পরিবারগুলো। সংসার ও পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে শত শত জেলে পরিবারের।
এ বিষয়ে ফরহাদ ও হানিফ হাওলাদার নামে দুই জেলে জানান, নদীতে মাছ ধরতে না পারায় জেলে পরিবারগুলো না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কর্মহীন জেলেরা মহাজনের দাদন আর এনজিওর ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মৎস্য দপ্তর সংশ্লিষ্টরা কিস্তি বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। এছাড়া চার মাস ধরে তারা চাল পান না বলে দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন বলেন, জেলেরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সরকারি প্রণোদনা ও সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন। আমরা জেলেদের মাঝে খুই শীঘ্রই চাল বিতরণ করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম তালুকদার ঢাকাপ্রকাশকে জানান, নদীতে বর্তমানে প্রচুর ইলিশের বাচ্চা থাকায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য গুদামে চাল নেই। চাল এলেই বিতরণ শুরু করা হবে।
এদিকে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছেন অসাধু জেলেরা। এর পাশাপাশি ইলিশের বাচ্চাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিধন করে উপজেলার হাটবাজারগুলোতে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দশমিনা-ঢাকাগামী লঞ্চগুলোতে নিয়মিত জাটকাসহ বিভিন্ন মাছ প্রকাশ্যে চালান করা হচ্ছে।
এসআইএইচ