১৪ মাস ধরে অচল ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স
চালক না থাকায় ১৪ মাস ধরে অচল হয়ে আছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রোগীরা। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে রোগীদের।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামছুন্নাহারের সরকারি বাসভবনে চুরি হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরির সঙ্গে জড়িত চারজনকে আটক করে পুলিশ। নির্দেশ দাতা হিসেবে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলীকেও আটক করা হয় এবং তাকে হাসপাতাল থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে পাঁচজনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করে তাদের কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। তারপর থেকেই গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে আছে অ্যাম্বুলেন্স।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা এলাকার এমদাদুল হক মিলন বলেন, কয়েকদিন আগে আমার এক আত্মীয় গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হয়। ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স নিতে এলে চালক না থাকায় পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে বেশি খরচে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
একই কথা জানানও স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম। তিনিও অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তার আত্মীয়কে রংপুর নিয়ে যান। এতে খরচও বাড়ে, আবার সময়ও বেশি লাগে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের আব্দুল জলিল বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় আমরা রোগীর স্বজনরা চরম বিপাকে পড়েছি। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মাইক্রোবাস ভাড়া করেই রোগীকে রংপুর নিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেন আছে, অনেক সুবিধা, খরচও অনেক কম। মাইক্রোবাসে অক্সিজেন নেই খরচও অনেক বেশি। আমরা অনেক চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
১৪ মাস পার হলেও কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স চালকের ব্যবস্থা না করায় চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কান্তী সাহা জানান, চালক একাব্বর জামিনে মুক্ত হলেও আদেশ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ওই চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর কোনো বিধান নেই। এ কারণে ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে অ্যাম্বুলেন্স তালাবদ্ধ অবস্থায় গ্যারেজে পড়ে আছে। চালক না থাকার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক সাময়িক বরখাস্ত। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় পর্যন্ত বর্তমান চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোরও কোনো বিধান নেই। চালক আছে এবং নিয়ম অনুযায়ী তিনি বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন। চালকের পদটি শূন্য থাকলে এতদিন ব্যবস্থা হয়ে যেত। তারপরেও বিকল্প চালক নেওয়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে তা নিরসন হবে।
এসএন