শ্বশুরের বিরুদ্ধে জামাইকে হত্যার অভিযোগ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মেয়ের জামাইকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে। শ্বশুর হাজী আব্দুল মালেক হত্যার পর মরদেহ ছেলের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন বলেও নিহতের পরিবারের অভিযোগ। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ।
গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে একই দিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহত যুবকের নাম মো.মোবারক হোসেন শাওন (১৮), সে উপজেলার ১৪নং হাজীপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর গ্রামের চিরাম বাড়ির শাহাব উদ্দিনের ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই মাস্টার সিরাজুল ইসলাম বলেন, শাওন উপজেলার চৌমুহনী বাজারের হকার্স মার্কেটের তাহেরা ট্রেডার্সের মালিক হাজী আব্দুল মালেকের দোকানে প্রায় দুই বছর যাবৎ চাকরি করছে। দুই মাস আগে আমরা জানতে পারি শাওনের সাথে মালেক তার পালক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শাওনের শ্বশুর তার বাড়িতে এসে তাকে খোঁজ করেন। শাওন তখন গোসল করছিল। গোসল শেষে শাওন ঘরে এলে তার শ্বশুর তাকে বলে সুন্দর দেখে পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পরতে বলেন। তার শ্বশুর শাওনকে বলেন তোমার মাকে সালাম করো, দোয়া নাও এবং মাফ চেয়ে নাও। এরপর তিনি শাওনকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান।
তিনি আরও জানান, শাওনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে গেলে সে পুলিশকে জানায় শাওনকে বিকেলের তার বাবা তাদের সামনে মারধর করেছে। তারপর সেখান থেকে তাকে কোথায় নিয়ে গেছে এ বিষয়ে সে কিছু জানেনা।
শাওনের মা শামসুন্নাহার জানান, দুপুরের দিকে মালেক আমার ছেলে তুলে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে আমি ঘরে একা ছিলাম। ওই সময় মালেকের দোকানের অপর দুইজন কর্মচারী কৌশলে আমার ছেলের মরদেহ দিয়ে দ্রুত চলে যায়। মতিন গোপনে তার পালক মেয়েকে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। সে আমার ছেলেকে আমাদের কাছে আসতে দিতনা। আসলে সাথে সাথে লোক পাঠিয়ে, না হয় সে এসে নিয়ে যেত। আমার ছেলে এসব বিষয়ে কখনো আমার কাছে মুখ খুলত না।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, খবর পেয়ে নিহতের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এর আগে মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়। শরীরে বড় কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ দুপুরে শ্বশুর তাকে নিয়ে যায়। এরপর হত্যা করে সন্ধ্যায় মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শাওনকে তার স্ত্রীর সামনে মারধর করা হয়েছে বলে তার স্ত্রী স্বীকার করেছেন বলেও জানান উপ-পরিদর্শক।
এসআই এনামুল হক আরও বলেন, রবিবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেএফ/