বিশ্ব নারী দিবস
স্বপ্নময়ী উদ্যোক্তা ‘আইরিন পারভীন’
স্বপ্নময়ী এক উদ্যোক্তা আইরিন পারভীন। যিনি মায়ের কাছে সেলাইয়ের কাজ শিখে ষষ্ঠ শ্রেণিতে মাফলার সেলাই করে মজুরি পেয়েছিলেন দশ টাকা। আর সেই দশ টাকা উপার্জনের চেষ্টার মূলধন এখন ত্রিশ লাখ টাকা। সুই-সুতোয় স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে শেরপুর শহরের বাসিন্দা আইরিন পারভীনের। ইতিমধ্যে তিনি নাম লিখেছেন একজন সফল উদ্যোক্তার খাতায়। সময়ের পরিবর্তনে আর ব্যবসার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দুটি কারখানায় কাজ করছে প্রায় দুইশতাধিক নারী। এই কর্মীদের অনেকের মা এখানে কাজ করে সংসারের অবস্থার পরিবর্তন করেছেন, এখন মেয়েও যুক্ত হয়েছেন একই পেশায়। তাদের হাতে তৈরি পণ্য যাচ্ছে ভারত, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে। মেয়েদের পোশাক, বিছানার চাদর, নকশি কাঁথাসহ শিশুদের জন্য তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের পোশাক। আর এখানে কাজ করে অনেকে ঘুরিয়েছে তাদের সংসারের চাকা।
সফল নারী উদ্যোক্তা ও অন্যান্য বুটিকের স্বত্বাধিকারী আইরিন পারভীন বলেন, আমি মায়ের মতো জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেলাইয়ের কাজ করে যেতে চাই। তবে আমি সরকারি কিংবা বেসরকারি সহযোগিতা পেলে কর্মীদের নিয়ে আরও ভালো কিছু উপহার দিতে পারব। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে অনেকের। ইতিমধ্যে আমার এখানে কাজ করে অনেক নারীই স্বাবলম্বী হয়েছেন।’
অনন্যা বুটিকে কাজ করা শ্রমিক আয়শা বেগম বলেন, ‘আগে আমাদের সংসার ঠিক মতো চলত না। অনেক কষ্ট করে দিনাতিপাত করতে হতো। বর্তমানে আল্লাহর রহমতে অনেক সুখে আছি।’
পাশেই আরেকজন শ্রমিক রুপালী বেগম। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে কাজ করে যা টাকা পাই, তা দিয়েই আমাদের সংসার সুন্দরভাবে চলে যায়। এরকম আরও কারখানা হলে অনেক নারীরাই স্বাবলম্বী হবে আমাদের মতো।’
মাধবপুর এলাকার বাসিন্দা শায়লা পারভীন বলেন, ‘আমি আগে জামালপুর থেকে নকশী কাঁথার পোশাক কিনে আনতাম। এখন হাতের কাছেই পাওয়া যাচ্ছে, তাও আবার নিজ শহরে। সত্যি খুব ভালো লাগে। তবে শো-রুম কম ও প্রচার না থাকায় অনেকেই জানেন না। নকশী কাঁথার বেশি শো-রুম থাকলে হয়তো নারীরা আরও এগিয়ে যেতে পারবে।’
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শেরপুরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান ফকির বলেন, যারা নকশী কাঁথা নিয়ে কাজ করছেন, ইতোপূর্বে বেশ কিছুজনকে প্রশিক্ষণ ও ঋণের আওতায় আনা হয়েছে। যদি কোনো উদ্যোক্তা বিসিকের কাছে সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের পরবর্তীকালে সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ করানো হবে।
টিটি/