প্রশ্নের বিনিময়ে ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকের কুপ্রস্তাব!
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষার আগেই এক ছাত্রীকে প্রশ্ন পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমিতে কর্মরত আছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমিতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা চলমান রয়েছে। আজ রবিবার দুপুর ২টার গণিত সৃজনশীল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শুক্রবার রাতে ছাত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া। পরে ওই ছাত্রীকে নিজের ইমো নম্বর দিয়ে প্রেম নিবেদনসহ আপত্তিকর প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে জানালে বিষয়টি সবার নজরে আসে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বড় ভাই বাবুল মিয়া বলেন, শুক্রবার রাতে সুহেল স্যার আমার বোনকে ফোন দিয়ে ইমোতে ফোন দিতে বলেন। কথা বলার পর ইমো নম্বরে গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠান। প্রশ্নের বিনিময়ে আমার বোনকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন তিনি। রবিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের রুমে আলাদা সময় না দিলে পরীক্ষার খাতায় নম্বর দেবে না বলেও জানান তিনি।
জয়-বাংলা গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জামাল পাশা জানান, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। ফলে অনেক ছাত্রী এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া বলেন, কে বা কারা আমার ইমো নম্বর থেকে প্রশ্নপত্রটা ছাত্রীর কাছে পাঠিয়েছে তা আমি জানি না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিএম শামসুল আলম চৌধুরী কায়কোবাদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও মদন শহীদ স্মরণিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার জ্যোৎস্না বেগম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকলে পরীক্ষাটি বাতিল করা হবে। ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিনা শাহরীন জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজি