জীবনমান উন্নয়ন প্রত্যয়ে ‘আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন’
‘আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন’ এসএসসি ২০০০ ও এইচএসসি ২০০২ সালের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যা মানব কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে। মানব কল্যাণে সংগঠনের পিছিয়ে পড়া সদস্য ছাড়াও সমাজের অবহেলিত ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলোর জন্য কাজ করাই ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
শুক্রবার ধারাবাহিক সামাজিক কাজের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘ইচ্ছে পূরণ ৪’ নিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজারামপুরের ‘নুরুল আমিন অটিজম ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’এর প্রায় শতাধিক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য নতুন থ্রি হুইলার অটো হস্তান্তর, ‘প্রজেক্ট অবলম্বন’ এর উদ্যোগে ৭টি হুইল চেয়ার, ১ জোড়া ক্র্যাচ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ‘ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি’র উদ্যোগে একবেলা খাবারের আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচিগুলোতে ফাউন্ডেশনের ঢাকা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলার ২৫ জন স্বেচ্ছাসেবী ছাড়াও ময়মনসিংহের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
ইতোমধ্যে ‘ইচ্ছে পূরণ ১’ এর মাধ্যমে লালমনিরহাটের ‘কালীগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’-এ একটি নতুন থ্রি হুইলার প্রদান ও অপর একটি বিকল থ্রি হুইলার মেরামত করে দেওয়া হয়, ‘ইচ্ছে পূরণ ২’ এর মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওয়ের ‘একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’ এর যাতায়াতের বাহন বিকল হয়ে যাওয়া লেগুনা পুনরায় মেরামত করে দেওয়া হয় এবং ‘ইচ্ছে পূরণ ৩’ এর মাধ্যমে রংপুরের ‘দৃষ্টি সংস্থা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’-এ ১টি নতুন থ্রি হুইলার ও ৫টি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়।
এসময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে ‘ইচ্ছে পূরণ’ কর্মসূচির আওতায় ভবিষ্যতেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। একই সঙ্গে আগামী দিনে এই কার্যক্রম দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ‘আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন’ ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত হয়। এর আগে ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ ‘এসএসসি ২০০০ ও এইচএসসি ২০০২ (আমরাই কিংবদন্তী)’ ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করে। এই গ্রুপের বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার।
এই গ্রুপটি এর আগেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কোভিড-১৯ কালীন ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক কার্যক্রম, দেশজুড়ে পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সহায়তা কার্যক্রম, ফ্রি হেলথ ক্যাম্প, অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ ও ধারাবাহিক খাবার বিতরণ, বৃদ্ধাশ্রমে চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের আর্থিক সহায়তা এবং রক্তদান কর্মসূচিসহ নানা কার্যক্রম। এ ছাড়া রয়েছে স্বাবলম্বীকরণ এবং ইচ্ছাপূরণের মতো স্থায়ী উদ্যোগ। যার মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে গ্রুপের পিছিয়ে পড়া সদস্যসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলের অসহায় মানুষদের পাশে চিকিৎসা সেবাসহ সব মৌলিক সেবা পৌঁছে দিতে পরিকল্পনা করছে এই গ্রুপের সদস্যরা।
এমএইচ/এসজি