খুলনায় খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসান
খুলনায় বিভিন্ন খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে জেলা পরিষদ ও কেসিসির দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক এক চিঠিতে ‘হাইকোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন নং-৪৫৭/২০১৬ এর ০৬/০৮/২০১৮’ তারিখের আদেশ অনুযায়ী রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খেয়াঘাটের পরিচালনায় জেলা পরিষদকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এর আগে ৭টি ঘাটের বন্দোবস্ত (ইজারা) দিতে দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়।
জানা যায়, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে শহরের সঙ্গে নদীপথে বিভিন্ন উপজেলার যোগাযোগে কাষ্টমঘাট, জেলখানাঘাট, দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাট, বার্মাশীল, নগরঘাট/রেলিগেটঘাট ও স্টিমারঘাট, খেয়াঘাট পরিচালনা করছে জেলা পরিষদ। রূপসা খেয়াঘাটের মালিকানা জেলা পরিষদের হলেও তা কেসিসি নিয়ন্ত্রণ করত।
গত ২৮ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগে দেওয়া চিঠিতে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম মাহমুদুর রহমান জানান, জেলা পরিষদ সৃষ্টিলগ্ন থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত এসব ঘাটের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৪১ ধারা তফসিলের ৯.২ নম্বর উপধারায় সরকার কোন জলাশয়ের অংশাবশেষকে ‘সাধারণ খেয়া পারাপার’ হিসেবে ঘোষণা করে তা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব করপোরেশনের উপর ন্যস্ত করতে পারবে। কিন্তু যেসব ঘাট আগে থেকেই খেয়াঘাট হিসেবে ঘোষিত এবং ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদের উপর ন্যস্ত সেগুলোকে পুনরায় ঘাট ঘোষণা দেওয়া আইন বহির্ভূত।
তিনি বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি এসব খেয়াঘাটের ইজারা দিতে দরপত্র ঘোষণা করে জেলা পরিষদ। কিন্তু ৫ মার্চ সিটি করপোরেশন ওই ঘাটের ইজারা দিতে পাল্টা দরপত্র দেয়। ফলে এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্ত্যপ্ত হয়।
জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে ঘাট পরিচালনা সংক্রান্ত জটিলতায় ২০১৬ সালের মামলায় হাইকোর্ট জেলা পরিষদের পক্ষে স্থগিতাদেশ দেয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৬ আগষ্ট হাইকোর্টের এক আদেশে আদালত কর্তৃক পূর্বে প্রদত্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক চিঠিতে বলা হয়, যেহেতু জেলা পরিষদের খেয়াঘাট বিষয়কে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের বিভাগে আদেশ রয়েছে এ অবস্থায় জেলা পরিষদকে এসব খেয়াঘাট বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ঘাট পরিচালনার নির্দেশনার চিঠি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুলিপি দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, দাপ্তরিক চিঠি পাওয়ার পর ঘাট বন্দোবস্ত কার্যক্রম চালু করেছে জেলা পরিষদ। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া হবে।
এসআইএইচ