রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরার রাজনীতি- পর্ব ৩

‘ডোন্ট ডিস্টার্ব’ চুক্তিতে জামায়াতের বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা!

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো বাকি ১০ মাস। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই গা-ঝাড়া দিয়ে মাঠে নামছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দেশের সর্ববৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি যখন একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত তখন ভোটের ছকে বদলে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী! পুরোনো রূপে আসছে নতুন চরিত্র।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর ৫ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধন বাতিলের পর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। তবে সেবারের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পাইনি জামায়াত। এসবের মধ্যে গতবছর বিএনপির জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে।

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীতে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মতো কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না তারা। ফলে প্রায় ২৪ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে জামায়াত-বিএনপির। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ায় কিছুটা হলেও ভারমুক্ত আওয়ামী লীগ। তবে জামায়াত, বিএনপিকে ছেড়ে দেওয়ায় নতুন করে ভাবাচ্ছে একযুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে। তবে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া জামায়াতের নির্বাচনের বড় পরিকল্পনা কি না সেটা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল। নিবন্ধন হারানো এই সংগঠনটি বর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দল হিসেবে তাদের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে জামায়াতের নেতারা অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারবেন। এতে আইনে কোনো বাধা নেই।

এসবের ভেতর দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। যে তালিকায় রয়েছে সাতক্ষীরার ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর নাম। একটি আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করলেও গোপনে জেলার ৪টি আসনেই নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

আসন ৪টিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, জাতীয় পার্টির দেবর-ভাবির বিরোধে বিভক্ত জাপার তৃণমূলের কোন্দলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত তাদের একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে মরিয়া। যদি নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত জোটগত না হয়ে আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সাতক্ষীরা সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে।

চার পর্বের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে আজ থাকছে সাতক্ষীরার সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও দলটির আদ্যপ্রান্ত নিয়ে।

সাতক্ষীরা-১: সাতক্ষীরা-১ আসন তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। জামায়াতের পক্ষ থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আনসার আলী জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য কোনো সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জয় পাইনি জামায়াতে ইসলামী। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ফিরে পেতে গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

সাতক্ষীরা-২: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসনটি। সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ৫ বার এই আসন থেকে জয়লাভ করেছে জামায়াত। তবে এ আসনে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কারও নাম ঘোষণা করেনি দলটি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতবারের মতো মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে পুনরায় জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে।

সাতক্ষীরা-৩: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেবহাটা উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নকে আশাশুনি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার পর এ আসনে টানা তিন মেয়াদসহ ৪ বার আওয়ামী লীগ জয় পেলেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনবার জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে বিএনপি জোটের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা ও কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে জেলা জামায়াতের আমির মুফতি রবিউল বাশারের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

সাতক্ষীরা-৪: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাতক্ষীরা-৫ আসনের শ্যামনগর উপজেলাকে কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করে নির্বাচন কমিশন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য তিনটি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পেলেও এ আসনে জয় পায়নি জামায়াতে ইসলামী। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রভাব থাকাই এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। গাজী নজরুল ইসলাম জামায়াতের জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে সাতক্ষীরা-৫ আসনকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করার পর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি সাতক্ষীরা-৪ আসনে পরাজিত হয়েছিলেন।

দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের কার্যক্রম ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীর ভাবনা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতবছর জামায়াতের পক্ষ থেকে দেশের ৩০০ আসনের বিপরীতে ১২০ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যে কোনো প্রচারণা না করলেও কৌশলগতভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা।

নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তৃণমূলের জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জানান, জামায়াতে ইসলামীর পুরুষ সদস্যরা নারী সদস্যদের চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন। তারা গ্রাম থেকে মহল্লা পর্যায়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করছেন আর জামায়াতের নারী কর্মীরা এলাকাভিত্তিক নির্বাচনী বৈঠক করে চলেছেন। মূলত নারীদের মাঝে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর পরিচয় করিয়ে দেওয়া সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য।

সাতক্ষীরার ৪টি আসনে জামায়াতের নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তারা বলেন, আমাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মী মামলায় জর্জরিত। এদের অনেকে এখনো জেলে রয়েছেন। এ কারণে আমরা কৌশল অবলম্বন করে আমাদের কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে তাদের নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে বিস্তর কোনো কিছু জানাতে রাজি হননি তারা।

তবে সূত্র বলছে, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সাতক্ষীরার ৪টি আসনে সরকার দলীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরোধ রয়েছে। তার উপর দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত, জাপায় দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত। আর সরকার দলীয় ও বিরোধী দলের এই কোন্দলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্য তৎপরতার চেয়ে অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে গ্রামভিত্তিক কাজ করছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

জামায়াতে ইসলামীর এক সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করেছে জামায়াত। রাজনৈতিক কারণে চুক্তির বিষয়টিও জামায়াতের মাঠপর্যায়ের নেতারা সেভাবে জানে না। আর এটি নিয়ে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মাঝেও রয়েছে মতবিরোধ। আর এই মতবিরোধের কারণে দ্বাদশ নির্বাচনের আগেই বিভক্ত হয়ে যেতে পারে যুদ্ধাপরাধীর তকমা লাগা এই সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি আসলে কী: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করে জামায়াতে ইসলামী। চুক্তিটি হচ্ছে, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে এমন কোনো কর্মসূচিও গ্রহণ করা হবে না যাতে সরকারের উপর চাপ আসবে। তাহলে সরকারও হস্তক্ষেপ থেকে দূরে থাকবে।’ গত কয়েক বছরে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম সে কথারই প্রমাণ রাখে। আর সরকারও অতীতের কঠোর অবস্থান থেকে ফিরে এসেছে। চলমান আমিরের হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক এমন দূরদর্শী নীতিকে জামায়াতের অনেক নেতারা সাদরে গ্রহণ করলেও জামায়াতের বড় একটি অংশের ক্ষোভ রয়েছে। যেটা জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের যেকোনো মুহূর্তে বিভক্ত করতে পারে।

জামায়াত নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা: সরকারের সঙ্গে জামায়াতের ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি যেমন সরকার দলীয় নেতাদের চিন্তার কারণ তেমনি সাধারণ জনগণের জন্য ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ জনগণের মাঝে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। তাদের ধারণা, এবারের নির্বাচনে জামায়াতের চুপ থাকা মোটেও ভালো লক্ষণ নই। তলে তলে সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে বিগত সময়ের মতো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এই দলটি। যার সমস্যা পোহাতে হবে আমাদের মতো সাধারণ জনগণের।

তারা বলেন, প্রতিটা নির্বাচন জনগণের কাছে একটি আমেজ। তবে বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচন থেকে এটি জনগণের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ চাই একটি অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ভোটের মাধ্যমে জানাব। কিন্তু বিগত সময়ে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যেভাবে সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করেছে সেটার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে। এটাই জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা বলে জানান তারা।

সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে জামায়াত একটি বড় ফ্যাক্ট। জেলার ৪টি আসনে রয়েছে জামায়াতের নির্দিষ্ট একটি ভোটব্যাংক। তবে ভাসমান ভোটার এবং নতুন ভোটার প্রতি নির্বাচনেই প্রভাব বিস্তার করে। যেটা ভাবনার কারণ হতে পারে জামায়াতে ইসলামীর জন্য। এ কারণে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো দলের প্রার্থীকে জয় পেতে হলে তরুণ ও ভাসমান ভোটারদের সমর্থন লাগবে। অন্যথায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জেলার সবকটি আসনে।

এসজি

Header Ad
Header Ad

আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী

বৈভব সূর্যবংশী। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলের মেগা নিলামে দল পাওয়ার পরই হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন বৈভব সূর্যবংশী। কারণ ওই সময়ে তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটিতে অভিষেক হতে হতে যা ১৪ পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু ব্যাটিংয়ে বুঝতেই দেননি অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে বয়সের ফারাকটা। প্রথম বলেই কাভার অঞ্চলের ওপর দিয়ে যেভাবে বলটাকে সীমানাছাড়া করলেন, তাতে চোখ জুড়ানো নেটিজেনরা বলে বসলেন ‘অ্যা স্টার ইজ বর্ন’!

বৈভব সূর্যবংশীর জন্ম হয়েছিল ২০১১ সালের ২৭ মার্চ, ততদিনে আইপিএলের দুটি আসর শেষে তৃতীয়টির অপেক্ষা। আর তার জন্মের বছরেই মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। সেই ক্রিকেটার আইপিএলের অষ্টাদশ আসরেই সুযোগ পেয়ে যাবেন এমনটা হয়তো কেউ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেনি। বৈভবকে আইপিএলের মেগা নিলামে ১.১ কোটি রুপিতে দলে ভিড়িয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস।

বৈভবের জন্য আরও আনন্দের বিষয় কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়ের মতো কিংবদন্তিকে পাওয়া। যদি আইপিএলের চলতি আসরে তাকে খেলানোর সম্ভাবনা কমই ছিল। কিন্তু রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের ইনজুরি তার অভিষেকের ক্ষণটা এগিয়ে আনে। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে গতকালই অভিষেক হয়ে গেল বিহারের এই বিস্ময়-বালকের। তবে ম্যাচটিতে তাকে ফিল্ডিং করতে হয়নি। ইম্প্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে কেবল ব্যাটিংয়েই নামেন বৈভব, অভিষেকেই খেললেন ২০ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ক্যামিও ইনিংস।

আইপিএলের প্রথম ম্যাচে বৈভবের যত রেকর্ড-

আইপিএলের মঞ্চে বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা, সেটাই প্রমাণ করলেন ১৪ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশী। ব্যাট হাতে অভিষেকেই ঝড় তুলেছেন এই কিশোর। প্রথম বলেই হাঁকালেন ছক্কা, গড়লেন একাধিক রেকর্ড—আর তাতেই ক্রিকেটবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে "অ্যা স্টার ইজ বর্ন" জ্বর!

রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছে বিহারের এই বিস্ময়বালকের। মাত্র ১৪ বছর ২৩ দিন বয়সে আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে মাঠে নামা খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখান বৈভব। এর আগে রেকর্ডটি ছিল প্রয়াস রায় বর্মণের (১৬ বছর ১৫৭ দিন) দখলে।

কিন্তু বৈভব এসেই যেন দেখালেন, তিনি এসেছেন ইতিহাস গড়তে। ইনিংসের প্রথম বলেই শার্দুল ঠাকুরকে কাভার দিয়ে উড়িয়ে মারেন ছক্কা—যা তাকে বানিয়েছে আইপিএলের সবচেয়ে কম বয়সে ছয় মারা ক্রিকেটার। এতোদিন রেকর্ডটি ছিল রাজস্থান রয়্যালসেরই রিয়ান পরাগের (১৭ বছর ১৬১ দিন) নামে।

শুধু এখানেই থামেননি বৈভব। আইপিএলে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকানো ক্রিকেটারদের ক্লাবে তিনিই দশম সদস্য। সেই তালিকায় আছেন আন্দ্রে রাসেল, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, মহেশ থিকশানা, রব কুইনিসহ আরও অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।

২১ মার্চ ২০১১ জন্ম নেওয়া বৈভব যখন এই ইনিংস খেলেন, তখন হয়তো অনেকেই ভুলে গিয়েছিলেন তার বয়স মাত্র ১৪। কারণ তার ব্যাটিংয়ে ছিল পরিপক্বতা, ছিল আত্মবিশ্বাস। ২০ বলে ৩ চার ও ২টি বিশাল ছক্কায় ৩৪ রানের ইনিংস খেলে স্ট্রাইক রেট ছুঁয়েছেন ১৭০।

যদিও ইনিংসের শেষ দিকে একটি ভুল শটে স্টাম্পড হয়ে বিদায় নেন এই কিশোর তারকা। ফেরার সময় চোখে জল লেগে ছিল—যা তার খেলায় আবেগ ও দায়বদ্ধতার পরিচয় দেয়।

রাজস্থানের ইনিংস থেমেছে ১৭৮ রানে, ১৮০ রানের লক্ষ্যে। ২ রানের হার সঙ্গী হলেও, এই ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন বৈভবই।

Header Ad
Header Ad

৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের

হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও মুসলিম উম্মাহর বিভিন্ন ইস্যু সামনে রেখে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে।

রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।

বৈঠকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বেশকিছু দাবির কথা বেলেন। তিনি ব‌লেন, ফ্যা‌সিবা‌দী আম‌লে হেফাজ‌তের বিরু‌দ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ২০১৩ সা‌লে শাপলা চত্বরে গণগত্যার বিচার করতে হবে। নারী সংষ্কার ক‌মিশ‌নের ধর্মীয় বিধান, ইসলামী উত্তরা‌ধিকার আইন ও পা‌রিবা‌রিক বৈষম্য প্রস্তাব ও ক‌মিশন বা‌তিল করতে হবে। তা না হলে ৩ মে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ ছাড়া ভারতীয় ওয়াকফ আইন ও ফি‌লিস্তান‌রে গণহত্যার প্র‌তিবাদে আগামী মঙ্গলবার থে‌কে ১ সপ্তাহ গণসং‌যোগ ও আগামী ২৫ এপ্রিল বাদ জুমআ প্রতি জেলা উপ‌জেলায় বি‌ক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দেয় দলটি।

Header Ad
Header Ad

আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন

প্রতীকী ছবি

প্রতি বছর এপ্রিলের তৃতীয় শনিবার বিশ্বজুড়ে উদযাপন করা হয় ‘হাজব্যান্ড অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে’ বা স্বামী প্রশংসা দিবস। স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য দিনটি পালন করা হয়—যার মূল উদ্দেশ্য পারিবারিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা।

স্বামীদের অবদানকে সম্মান জানাতেই এই বিশেষ দিনের প্রচলন। যদিও দিবসটির সূচনা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে পারিবারিক জীবনে স্বামীর ত্যাগ, দায়িত্ব ও ভালোবাসা স্বীকার করতেই দিনটি উপলক্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশেষ করে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে, যেখানে স্বামীরা শুধু উপার্জনের দায়িত্বই পালন করছেন না, পাশাপাশি ঘরের কাজ, সন্তান লালন-পালনসহ পারিবারিক নানা দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন—তাদের জন্য এমন একটি দিন আয়োজনের যৌক্তিকতাও বাড়ছে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কাউকে সামান্যভাবে প্রশংসা করলেও তার ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক হয় আরও মজবুত। বিশেষ করে দাম্পত্য সম্পর্কে এটি অত্যন্ত কার্যকরী।

এই দিনে স্বামীকে একটি চিরকুট, শুভেচ্ছা বার্তা বা ছোট্ট কোনো উপহার দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানানো যেতে পারে। এমনকি শুধু মৌখিকভাবে “তুমি অনেক ভালো করছো” বলাটাও হতে পারে প্রশংসার অনন্য উপায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবার গঠনের পথে যেমন স্ত্রীর অবদান রয়েছে, তেমনি স্বামীদের ভূমিকাও কম নয়। কাজেই সম্পর্কের ভারসাম্য ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে এমন দিনে সামান্য ভালোবাসা ও স্বীকৃতিই হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ভিত্তি।

প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানানো কোনো বিলাসিতা নয়, বরং সম্পর্ক রক্ষার এক চমৎকার অভ্যাস। তাই আজকের দিনটি হতে পারে আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে বিশেষভাবে জানানোর এক দারুণ সুযোগ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: ট্রাইব্যুনালে সালমান, আনিসুল, দীপু মনি, পলকসহ ১৯ জন
বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা
হাতিরঝিলে যুবদল নেতার ওপর হামলা, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে
আপিল বিভাগে নতুন দুই বিচারপতিকে সংবর্ধনা
বিয়ের আসরে কনের বেশে শাশুড়ি, থানায় হাজির বর
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ, রাস্তায় হাজারো মানুষ
সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা, বাড়বে তাপমাত্রাও
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
গাজায় আরও ৫২ জন নিহত, হামলা জোরদারের নির্দেশ নেতানিয়াহুর
উত্তরায় প্রকাশ্যে যুবককে তুলে নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল
অফিস সময়ে সভার জন্য সম্মানী না নিতে নির্দেশনা
অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক অপু