শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরার রাজনীতি- পর্ব ৩

‘ডোন্ট ডিস্টার্ব’ চুক্তিতে জামায়াতের বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা!

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো বাকি ১০ মাস। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই গা-ঝাড়া দিয়ে মাঠে নামছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দেশের সর্ববৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি যখন একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত তখন ভোটের ছকে বদলে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী! পুরোনো রূপে আসছে নতুন চরিত্র।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর ৫ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধন বাতিলের পর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। তবে সেবারের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পাইনি জামায়াত। এসবের মধ্যে গতবছর বিএনপির জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে।

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীতে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মতো কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না তারা। ফলে প্রায় ২৪ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে জামায়াত-বিএনপির। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ায় কিছুটা হলেও ভারমুক্ত আওয়ামী লীগ। তবে জামায়াত, বিএনপিকে ছেড়ে দেওয়ায় নতুন করে ভাবাচ্ছে একযুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে। তবে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া জামায়াতের নির্বাচনের বড় পরিকল্পনা কি না সেটা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল। নিবন্ধন হারানো এই সংগঠনটি বর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দল হিসেবে তাদের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে জামায়াতের নেতারা অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারবেন। এতে আইনে কোনো বাধা নেই।

এসবের ভেতর দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। যে তালিকায় রয়েছে সাতক্ষীরার ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর নাম। একটি আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করলেও গোপনে জেলার ৪টি আসনেই নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

আসন ৪টিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, জাতীয় পার্টির দেবর-ভাবির বিরোধে বিভক্ত জাপার তৃণমূলের কোন্দলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত তাদের একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে মরিয়া। যদি নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত জোটগত না হয়ে আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সাতক্ষীরা সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে।

চার পর্বের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে আজ থাকছে সাতক্ষীরার সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও দলটির আদ্যপ্রান্ত নিয়ে।

সাতক্ষীরা-১: সাতক্ষীরা-১ আসন তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। জামায়াতের পক্ষ থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আনসার আলী জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য কোনো সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জয় পাইনি জামায়াতে ইসলামী। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ফিরে পেতে গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

সাতক্ষীরা-২: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসনটি। সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ৫ বার এই আসন থেকে জয়লাভ করেছে জামায়াত। তবে এ আসনে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কারও নাম ঘোষণা করেনি দলটি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতবারের মতো মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে পুনরায় জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে।

সাতক্ষীরা-৩: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেবহাটা উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নকে আশাশুনি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার পর এ আসনে টানা তিন মেয়াদসহ ৪ বার আওয়ামী লীগ জয় পেলেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনবার জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে বিএনপি জোটের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা ও কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে জেলা জামায়াতের আমির মুফতি রবিউল বাশারের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

সাতক্ষীরা-৪: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাতক্ষীরা-৫ আসনের শ্যামনগর উপজেলাকে কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করে নির্বাচন কমিশন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য তিনটি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পেলেও এ আসনে জয় পায়নি জামায়াতে ইসলামী। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রভাব থাকাই এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। গাজী নজরুল ইসলাম জামায়াতের জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে সাতক্ষীরা-৫ আসনকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করার পর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি সাতক্ষীরা-৪ আসনে পরাজিত হয়েছিলেন।

দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের কার্যক্রম ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীর ভাবনা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতবছর জামায়াতের পক্ষ থেকে দেশের ৩০০ আসনের বিপরীতে ১২০ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যে কোনো প্রচারণা না করলেও কৌশলগতভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা।

নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তৃণমূলের জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জানান, জামায়াতে ইসলামীর পুরুষ সদস্যরা নারী সদস্যদের চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন। তারা গ্রাম থেকে মহল্লা পর্যায়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করছেন আর জামায়াতের নারী কর্মীরা এলাকাভিত্তিক নির্বাচনী বৈঠক করে চলেছেন। মূলত নারীদের মাঝে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর পরিচয় করিয়ে দেওয়া সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য।

সাতক্ষীরার ৪টি আসনে জামায়াতের নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তারা বলেন, আমাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মী মামলায় জর্জরিত। এদের অনেকে এখনো জেলে রয়েছেন। এ কারণে আমরা কৌশল অবলম্বন করে আমাদের কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে তাদের নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে বিস্তর কোনো কিছু জানাতে রাজি হননি তারা।

তবে সূত্র বলছে, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সাতক্ষীরার ৪টি আসনে সরকার দলীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরোধ রয়েছে। তার উপর দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত, জাপায় দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত। আর সরকার দলীয় ও বিরোধী দলের এই কোন্দলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্য তৎপরতার চেয়ে অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে গ্রামভিত্তিক কাজ করছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

জামায়াতে ইসলামীর এক সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করেছে জামায়াত। রাজনৈতিক কারণে চুক্তির বিষয়টিও জামায়াতের মাঠপর্যায়ের নেতারা সেভাবে জানে না। আর এটি নিয়ে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মাঝেও রয়েছে মতবিরোধ। আর এই মতবিরোধের কারণে দ্বাদশ নির্বাচনের আগেই বিভক্ত হয়ে যেতে পারে যুদ্ধাপরাধীর তকমা লাগা এই সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি আসলে কী: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করে জামায়াতে ইসলামী। চুক্তিটি হচ্ছে, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে এমন কোনো কর্মসূচিও গ্রহণ করা হবে না যাতে সরকারের উপর চাপ আসবে। তাহলে সরকারও হস্তক্ষেপ থেকে দূরে থাকবে।’ গত কয়েক বছরে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম সে কথারই প্রমাণ রাখে। আর সরকারও অতীতের কঠোর অবস্থান থেকে ফিরে এসেছে। চলমান আমিরের হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক এমন দূরদর্শী নীতিকে জামায়াতের অনেক নেতারা সাদরে গ্রহণ করলেও জামায়াতের বড় একটি অংশের ক্ষোভ রয়েছে। যেটা জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের যেকোনো মুহূর্তে বিভক্ত করতে পারে।

জামায়াত নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা: সরকারের সঙ্গে জামায়াতের ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি যেমন সরকার দলীয় নেতাদের চিন্তার কারণ তেমনি সাধারণ জনগণের জন্য ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ জনগণের মাঝে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। তাদের ধারণা, এবারের নির্বাচনে জামায়াতের চুপ থাকা মোটেও ভালো লক্ষণ নই। তলে তলে সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে বিগত সময়ের মতো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এই দলটি। যার সমস্যা পোহাতে হবে আমাদের মতো সাধারণ জনগণের।

তারা বলেন, প্রতিটা নির্বাচন জনগণের কাছে একটি আমেজ। তবে বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচন থেকে এটি জনগণের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ চাই একটি অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ভোটের মাধ্যমে জানাব। কিন্তু বিগত সময়ে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যেভাবে সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করেছে সেটার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে। এটাই জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা বলে জানান তারা।

সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে জামায়াত একটি বড় ফ্যাক্ট। জেলার ৪টি আসনে রয়েছে জামায়াতের নির্দিষ্ট একটি ভোটব্যাংক। তবে ভাসমান ভোটার এবং নতুন ভোটার প্রতি নির্বাচনেই প্রভাব বিস্তার করে। যেটা ভাবনার কারণ হতে পারে জামায়াতে ইসলামীর জন্য। এ কারণে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো দলের প্রার্থীকে জয় পেতে হলে তরুণ ও ভাসমান ভোটারদের সমর্থন লাগবে। অন্যথায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জেলার সবকটি আসনে।

এসজি

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ