ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেল শিশুর, গ্রেপ্তার ২
ঝিনাইদহে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ইসরাত জাহান মাহেরা (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল মালিক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে গা ঢাকা দিয়েছেন হাসপাতালটির নার্সসহ স্টাফরা। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারায়নপুর ত্রিমোহনী এলাকায় অবস্থিত ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিশু মাহেরা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে পেট ব্যাথা নিয়ে ইসরাত জাহান মাহেরা নামে সাত বছরের এক শিশু ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। ভর্তির পরে চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক শিশুটির শরীরে পরপর তিনটি ইঞ্জেকশন পুশ করে নার্সরা। ফলে সন্ধ্যা নাগাদ শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটির মুমূর্ষ অবস্থা দেখে মা শামীমা আক্তার ডিউটিরত কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের শরণাপন্ন হলে তিনি ঝিনাইদহে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ৮টার দিকে শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এদিকে অপচিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা। তারা ক্লিনিকে ঢুকে ডাক্তারের চেম্বার, অপারেশন থিয়েটার ও প্যাথলজিক্যাল কক্ষসহ আসবাবপত্র তছনছ করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হাসপাতাল মালিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভুল চিকিৎসার কারণে ইতিপূর্বে মানহীন ওই ক্লিনিকটি একাধিকবার সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। ক্লিনিকে সর্বক্ষণ কোনও চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্স ছাড়াই চলে আসছে বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মো. সোহেল রানা জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্লিনিক মালিক ও কথিত এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ