অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, তারা নির্বাচিত নন, বরং নিঃসন্দেহে অনির্বাচিত। রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদের ‘জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহ উদ্দিন বলেন, “গণতন্ত্রের কথা বলে আপনারা গণতন্ত্রের উল্টো পথে হাঁটছেন। নির্বাচনের কথা বলে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছেন। এটা কি গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ছিল? আপনাদের অবশ্যই প্রতিদিন মনে করিয়ে দেওয়া হবে যে আপনারা অনির্বাচিত।”
তিনি অভিযোগ করেন, যখন প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বিএনপি রোডম্যাপ দাবি করছে, তখন কয়েকজন উপদেষ্টা পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব চাওয়ার মতো বক্তব্য দিচ্ছেন, যা বিভ্রান্তিকর।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, “উনার বিরুদ্ধে অনেক মন্তব্য হয়েছে, উনি সেগুলো দেখেননি?” একইসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার বক্তব্যেরও সমালোচনা করে বলেন, “ফরিদা আপা বলেছেন, উনারা নির্বাচিত হয়েছেন। কীভাবে? গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে? তাহলে নির্বাচন কমিশন আছে কেন?”
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “যদি রাস্তায় গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়, সেটা জনগণের কামনা হতে পারে। কিন্তু তা হলেও আপনারা একটি নির্বাচিত সরকারের বিকল্প হতে পারেন না।”
তিনি আরও বলেন, কবি–চিন্তক ফরহাদ মজহার সম্প্রতি বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না—এ মন্তব্যেও বিস্ময় প্রকাশ করেন সালাহ উদ্দিন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “নির্বাচন, ভোটাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে এই জাতি যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তার কী মূল্য রইল? আপনারা কি অগণতান্ত্রিক শক্তিকে সুযোগ দিচ্ছেন?”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে আপনার বক্তব্যে বারবার পরিবর্তন জাতি ও আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।”
সালাহ উদ্দিন বলেন, “আমাদের সঙ্গে বৈঠকে আপনারা নির্বাচন নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনও বলেছে তারা জুনের মধ্যে প্রস্তুত হবে। তাই আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আশা করি।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ। একই অনুষ্ঠানে ভাসানী অনুসারী পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাসানী জনশক্তি পার্টি’ ঘোষণা করা হয়। শেখ রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান এবং আবু ইউসুফ সেলিমকে মহাসচিব করা হয়।