ভাঙারি ব্যবসায়ী থেকে কোটি টাকার মালিক চোরাকারবারি টাঙ্গাইলের করিম
ফাইল ছবি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের নিকরাইল ইউনিয়নের সিরাজকান্দি এলাকার এক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান আব্দুল করিম মিঞা। কয়েক বছর আগেও পরিবারে তেমন স্বচ্ছলতা ছিল না। পরে সংসারের হাল ধরতে নিজ এলালাকেই শুরু করেন ভাঙারির ব্যবসা। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লক্ষ্যে ভাঙারি ব্যবসার পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন চোরাকারবারিতে। এরমধ্যে ঢাকায় গিয়ে রড মিলে চাকরি শেষে গ্রামে ফিরে নিজেই শুরু করেন রডের ব্যবসা।
এরপর আওয়ামী লীগের লেবাস গায়ে জড়িয়ে গড়ে তুলেন আন্তঃজেলা চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। এতে অল্প দিনেই হয়ে উঠেন কোটি কোটি টাকার মালিক। কিনেছেন জায়গা-জমি ও বাসা-বাড়ি। সিরাজকান্দি বাজারের তার গোডাউন থেকে মোটা অঙ্কের টাকার চোরাই রড উদ্ধারের পর বেরিয়ে আসে এমন তথ্য ও চোরাকারবারি করিমের তার আসল চেহেরা।
যেভাবে বেরিয়ে আসল থলের বিড়াল
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার সালাম স্টীল কনকাস্ট রি-রোলিং মিলস্ (মদনপুর ইউনিট) থেকে ট্রাক ভর্তি ২০ টন রড নিয়ে চালক মো. হাসান (২৭) কেরানীগঞ্জের হাসানাবাদ ট্রের্ডাসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর আর ট্রাক ভর্তি রড ও চালককে পাওয়া যায়নি। পরে ওই দিন নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় একটি অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে সালাম স্টীল মিলস্ এর জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল আলম পলাশ বলেন- গত ১৮ তারিখে রাতে মিল থেকে ২০ টন রড নিয়ে একটি ট্রাক বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে চালক, ট্রাক ও রডের কোন খবর পাওয়া যায় না। পরে থানায় একটি অভিযোগ করি। পরে ১৯ তারিখ ওই ট্রাকে থাকা একজন হেলপার অফিসে এসে জানায় রড গুলো টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার সিরাজকান্দি বাজার এলাকায় একটি দোকানে রাখা হয়েছে এবং ট্রাকটিও আছে সেখানে। পরে আমরা থানার পুলিশের সহায়তায় সেখানে যাই এবং ট্রাক ও রড উদ্ধার করা হয়। তবে খবর পেয়ে চোরাকারবারি আব্দুল করিম পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত করিমের শাস্তি দাবি করছি।
চোরাকারবারি করিম মিঞার প্রসঙ্গে যা বলছে এলাকাবাসী
কিছুদিন আগেও করিম মিঞা ছিল ভাঙারি ব্যবসায়ী। সংসার চলতো না। ঢাকায় একটি রড কোম্পানিতে চাকরি পর পুনরায় এলাকায় শুরু করে রডের ব্যবসা। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সঙ্খ তৈরি করে এবং গায়ে আওয়ামী লীগের লেবাস লাগিয়ে গড়ে তুলে আন্তঃজেলা চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। রাতারাতি হন কোটি কোটি টাকার মালিক। শুধু তাই নয়, তিনি চোরাকারবারি ছাড়াও মাদক, অবৈধ বালুর ব্যবসাসহ ডাকাত চক্রের স্থানীয় মূলহোতা ছিলেন। জোর জুলম ও নির্যাতন করে কেড়ে নিয়েছেন অন্যের জায়গা-জমিও।
চোরাকারবারি আব্দুল করিমের অবৈধ অর্থের উৎস বের করে গ্রেপ্তারসহ নানা অপকর্মের বিচার চেয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম বলেন, রড চুরির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করি। গোপন সংবাদে জানতে পারি রড ও ট্রাকটি কোথায় হদিস। পরে রড চোর চক্রের মূলহোতা মের্সাস করিম এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী আব্দুল করিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ টন রড জব্দ করা হয়। রড উদ্ধারের দিন থেকে করিম পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।