দপ্তরে বসে গুনে গুনে ঘুষ নেওয়া ভূমি কার্যালয়ের সেই সহকারী বরখাস্ত
দপ্তরে বসে গুনে গুনে ঘুষের টাকা নিচ্ছেন আবদুল কাদির মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দপ্তরে সেবা নিতে আসা এক ব্যক্তির কাছ থেকে গুনে গুনে ঘুষের টাকা নেওয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের সহকারী আবদুল কাদির মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রবিবার (৩১ মার্চ) বিকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আব্দুল কাদির মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহানকে এ ঘটনার তদন্ত করে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
এর আগে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আব্দুল কাদির মিয়ার বিরুদ্ধে খাজনা খারিজ করে দেওয়ার জন্য ঘুষের টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে। টাকা নেওয়ার সময় গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা ভোলা মিয়া বলেন, ‘মাইজখাপন ভূমি অফিসে দুইটা জমা খারিজ, খাজনা এবং কলমি নকশাবাবদ পাঁচ হাজার টাকা দিছি কাদির ভাইকে। পাচঁ থেকে ছয়শত টাকা বাড়াইয়া দিছি তাকে। এটা বকশিশ বাবদ দিয়েছি। এটা কোনো ঘুষ না। কে বা কারা এটা ভিডিও করে পাঠাইছে, এটা আমি জানি না। কাদির ভাইয়ের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমরা গ্রামের মানুষ অনলাইনে আবেদনের বিষয় এত ভালো করে বুঝি না। ওনার কাছে সহযোগিতা চাইলে উনি আমাদের সহযোগিতা করেন।’
অফিস সহায়ক আব্দুল কাদির মিয়া ঘুষের টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কয়েক দিন আগে লোকটাসহ (যিনি ওই ঘটনার ভিডিও করেছিলেন) আরও কয়েকজন বেশ কয়েকটা অন্যায় কাজের তদবিরে আমাদের অফিসে এসে আমাকে সহযোগিতার জন্য প্রথমে অনুরোধ, পরে চাপ দিতে থাকে। অন্যায় কাজ হওয়ায় আমি রাজি না হলে তার মোবাইলে থাকা পাঁচ মাস আগের সেই ভিডিও আমাকে দেখিয়ে টাকা দাবি করেন। নয়তো ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি যেহেতু অন্যায় করিনি এজন্য আপোস করিনি। রবিবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার শোকজের জবাব বিধি মোতাবেক দিয়েছি।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান বলেন, ‘আমি এখনও লিখিতভাবে তদন্তের নির্দেশনা পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’