তালাক দেওয়ায় স্ত্রীসহ নিজের গায়ে আগুন দিয়ে পুড়ে মরলেন দুজনেই

ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরায় স্ত্রী তালাক দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্ত্রী ডা. লতা আক্তারসহ নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন স্বামী খলিলুর রহমান খলিল। এ ঘটনায় প্রাণ হারান স্বামী খলিলুর রহমান খলিল। আর তার দুই দিন পর সাবেক স্ত্রী ডা. লতা আক্তারেরও (৩২) মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. লতার মৃত্যু হয়।
ডা. লতা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন তার চাচা ফারুক। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, লতার মরদেহ হাসপাতালের কাজ করে বাড়িতে আনা হয়েছে। তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণেরটেক এলাকায় ডা. লতার বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর খবর পেয়ে ঘর থেকে দগ্ধ দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে লতাক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আর খলিলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
নিহত লতা আক্তার রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়ন ব্রাহ্মনেরটেক গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি ঢাকার গুলশান এলাকার শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেব দায়িত্ব পালন করতেন। তার প্রাক্তন স্বামী খলিলুর রহমান খলিল গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের আতর আলী বেপারীর ছেলে।
জানা গেছে, চিকিৎসক লতা ও খলিলের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর দুই বছর আগে তারা গোপনে বিয়ে করেন। তবে খলিল নিজের ড্রাইভার পরিচয় গোপন করে বিয়ে করেন। তাই দুই মাস আগে লতা উকিলের মাধ্যমে তার স্বামীকে তালাকনামা পাঠান। কিন্তু খলিল তাকে নিয়ে সংসার করতে চান। এ বিষয়ে তাদের নিয়ে গত মাসে গ্রাম্য সালিশ হয়। সালিশেও লতা তার সঙ্গে সংসার করতে আপত্তি জানান। পরে রোববার দুপুরে লতার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সাবেক স্ত্রী লতা ও নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন খলিল। এ সময় স্থানীয়রা চিৎকার শুনে দরজা ভেঙে ঘর থেকে উভয়কেই দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। লতাকে স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠান। অপরদিকে আহত খলিলকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মরজাল ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তুহিন ভূইয়া বলেন, লতার পরিবার সূত্রে জানতে পারি বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
রায়পুরা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, খবর পেলাম লতা ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ঘটনার পর পর লতার পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।
