কিশোরগঞ্জে চাচা-ভাতিজার পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাচা-ভাতিজা। মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসের নাজির আতাউর রহমান খান মিন্টুর বিরুদ্ধে জমি ক্রয়ে রাজস্ব ফাঁকি, অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন তার ভাতিজা মুহিত উদ্দিন খান।
ভাতিজার এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (৩ মে) জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে সংবাদ সম্মেলন করেন আতাউর রহমান খান। জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা ও মনগড়া অভিযোগ দিয়ে তদন্তের মুখে ফেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো সবই ভিত্তিহীন, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই মুহিত এগুলো করছে। পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে মুহিত লিখিত অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে বিলি করছে। সরকারি চাকরি করে অভিযোগের জবাব দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে হয়রানি করছে মুহিত। আমি এতদিন সম্মানের ভয়ে আদালতের দ্বারস্থ হইনি। তার এসব কাজের জন্য আমি আদালতে মামলা করব আর আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনে দেওয়া অভিযোগটির তদন্ত হচ্ছে। আশা করি অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আতাউর রহমান খানের বাড়ি জেলার তাড়াইল উপজেলার পূর্ব দড়িজাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। তিনি এখন আর গ্রামে থাকেন না। তার ভাই মৃত মোতাহার হোসেন খানের ছেলে মুহিত উদ্দিন খান ওই গ্রামে থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমান বলেন, মুহিতদের অত্যাচার-নির্যাতনে বাধ্য হয়ে আমি বাড়ি ছেড়ে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় থাকি। তাদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে পূর্ববিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা থাকার কথাও স্বীকার করেন নাজির। তা ছাড়া মুহিতের বিরুদ্ধে এলাকায় সরকারি খাস জায়গা দখল, ভূমি দস্যুতা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ইন্ধনে মুহিত দিনের পর দিনে এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমানের ভাই মাহবুবুর রহমান খান, ভাতিজা নাজিবুর রহমান খান, প্রতিবেশী লিয়াকত আলী ও সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মুহিত তার চাচার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, আতাউর রহমান দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযুক্তকে স্বপদে রেখেই জেলা প্রশাসনের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আতাউর রহমানের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার বসু জানান, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজি