'রাজনীতি সমাজসেবার সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম'
আমার বাবা এমন একজন মানুষ ছিলেন, যার জন্য অমরা গর্বিত। আমি মনে করি এমন মানুষ প্রতিদিন জন্মগ্রহণ করে না। তাদের জন্মটা মানুষের জন্য, দেশের জন্য, জাতির জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য মানুষরূপি পিশাচদের হাতে নিষ্ঠুরভাবে আমার বাবাকে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে। আমার বাবার হত্যাটা অত্যন্ত দু:খজনক ছিল। তাকে রাজপথে হত্যা করা হয়েছে। কোনো গুলি করে নয়, বোমা মেরে নয়, দিনে-দুপুরে ছুরিকাঘাতে প্রকাশ্যে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৩৮ বছর পর যে গুনটির জন্য তাকে আপনারা মনে করছেন তার সবচেয়ে বড় গুণটিই ছিল দেশপ্রেম এবং বিশ্বস্ততা। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত বিশ্বস্ত একজন সৈনিক ছিলেন। সমাজসেবাকে ব্রতী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। আমদেরকেও সেইভাবে গ্রহণ করতে হবে।
অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হয়, আমার বাবাকে প্রকাশ্যে যারা খুন করেছিল, যারা আজ গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে তাদেরকে তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সাধারণ ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। পরে বাবা খুনের মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ১২ জনকে তার দলে স্থান দিয়েছেন। তাদের এক খুনী আজম খানকে জাতীয় পার্টির পদ দিয়ে বড় নেতা বানানো হয়েছে। এটা দিয়েই বুঝা যায় তারা সন্ত্রাসকে কিভাবে লালন করেছে সেই সময়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, যে নেতা আমাদেরকে স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন, যে নেতা আনন্দ উপভোগ করার সময় পাননি, বছরের পর বছর কারারুদ্ধ ছিলেন, তার পরিবারের স্ত্রী সন্তানেরা বাবাকে-স্বামীকে সেইভাবে পাননি অথচ সেই মানুষটিকে হত্যা করা হয়েছে।
শহীদ ময়েজ উদ্দিনের ৩৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ালী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি এমপি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছেন। তারই ফলশ্রুতিতে আজকে আপনাদের সাথে আমি কাজ করতে পারছি। আমার বাবা সবসময় বলতো রাজনীতি হলো সমাজসেবায় সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম। কাজেই এই রাজনীতি দিয়েই আমরা মানুষের সবচেয়ে বেশি খবরাখবর নিতে পারবো। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের ফলে, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে, দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা যে দেশ পেয়েছি সেই দেশটাকে এখন আমদের গড়ে তুলতে হবে। এটাই হলো আমাদের মূল কাজ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সমাজের আয়না। আপানার সমাজের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন। আপনারা ইতিহাসকে আরো বেশি করে তুলে ধরতে পারেন। আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে নিজেরাই সম্পর্ক ঠিক রাখতে না পারেন, আপনারা যদি নানা কারণে সমালোচনার শিকার হোন, তখন কিন্তু আপনাদেেেরক মানুষ সেভাবে আর গুরুত্ব দেবে না। আপনাদের নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। ব্যক্তিত্বের জন্য যে গুণাবলী আছে সেটা শুধু রাজনীতিবিদ নয়, আপনাদের মাঝেও আনতে হবে।
এএজেড