সোনিয়ার বাসায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ, মুক্তির দাবি
ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার সোনিয়া আক্তার স্মৃতির বাসায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৬ই অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেত্রী সোনিয়া আক্তার স্মৃতির ৩নং বেড়াডাঙ্গার বাসায় যান জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য ও মহিলা দলের সহ-সভাপতি নেওয়াজ হালিমা এলিন, সাবেক সংসদ সদস্য ও মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম।
এর আগে সকালে বিএনপির আর একটি দল স্মৃতি ইসলামের বাসায় যান বিএনপির নির্বাহী কমিটিকেন্দ্রীয় নেতা নিপুণ রায় চৌধুরী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরিদপুর বিভাগীয় সমন্বয়কারী শামা ওবায়েদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডঃ লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব এডঃ কামরুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম পিন্টুসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা সোনিয়া আক্তার স্মৃতির বাড়িতে এসে দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় তারা ঘোষণা দেন, সোনিয়াকে আইনিসহ সব ধরনের সহযোগিতা করবে বিএনপি।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, সোনিয়া ইসলাত স্মৃতিকে অমানবিকভাবে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্মৃতির দুই শিশুসন্তান এবং পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছি। তার সন্তানদের জন্য উপহার সামগ্রী ও মামলা পরিচালনা করার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান টাকা পাঠিয়েছেন। এই অবৈধ সরকারে অধিনে শুধু স্মৃতি নয় আমরা কেউ নিরাপদ নয়। স্মৃতির মতো যে কোনো সময় আমাদের কেউ গ্রেফতার করা হতে পরে। এই অবৈধ সরকার জাতির জন্য আমাদের জন্য বিষফোড়া। আমরা তাদের পদত্যাগ নয় অপসারণ চাই। মানুষ তার মত প্রকাশ করতে পাচ্ছে না। আমরা স্মৃতির নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
নিপুন রায় বলেন, সোনিয়া আক্তার স্মৃতি "রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব" এর প্রতিষ্ঠাতা এবং রাজবাড়ী জেলা মহিলা দলের নেত্রী সে। তাকে অমানবিকভাবে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্মৃতির দুই শিশুসন্তান এবং পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে আমরা বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম এবং নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম এর প্রতিনিধি দল আজ রাজবাড়ীতে এসেছি। তিনি আরো বলেন, গভীররাতে স্মৃতির বাসায় তার দুইটি শিশু সন্তানকে থাকার পরও তাকে পুলিশ বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে। স্মৃতিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর অবুঝ দুই শিশু সন্তান বাসায় একা পড়ে ছিলো এই সরকারের কি বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে গেছে।
এসময় শামা ওবায়েদ বলেন, সোনিয়া আক্তার স্মৃতির জন্য যত রকম আইনী সহায়তা লাগবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তা-ই দেবেন। এরই মধ্যে তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পর থেকে তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন। আমরাও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে এখানে এসেছি। তিনি আরো বলেন, শুধু সোনিয়া আক্তার স্মৃতি নয়, এভাবে সরকারের দ্বারা নির্যাতিত প্রতিটি পরিবারের দায়িত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়েছেন। আমাদের ক্ষমতার দরকার নেই, আমাদের দরকার জনগণের ভালোবাসা। এই ভালোবাসা নিয়ে বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বাদী মো. সামসুল আরেফিন চৌধুরীর এজাহারের প্রেক্ষিতে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বেড়াডাঙ্গা এলাকার মোঃ খোকন মিয়ার স্ত্রী। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব' নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও রাজবাড়ী মহিলা দলের সদস্য। গ্রেপ্তারের পর তাকে গতকাল বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এএজেড