আওয়ামী লীগকে ডাকাতির সুযোগ দেওয়া যাবে না: ফখরুল
আওয়ামী লীগকে আবার ডাকাতি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। নিরপেক্ষ নিবাচন হলে তারা আর কখনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। দেশটি কারো দয়ায় আমারা পাইনি। আমাদের সকলের দেশে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশটাকে লুট করে নিচ্ছে। তাদেরকে আর ডাকাতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন নেই। গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সাবেক মন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার (অব.) আ স ম হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবাষিক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে বিএনপির মহা সচিব মিজা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২৫টির বেশি আসন পাবে না। আর এ কারনে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কায়দায় বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের গুম, খুন করে ভয় দেখানো হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জনগনের ভোট ছাড়াই ১৫৪ জন এমপি হয়েছিলেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের পায়ের তলায় এখন মাটি নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচনকালিন সহায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সকল দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী করতে হবে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন হউক। যেন জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন।
রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে সরকারকে জাতীয় ঐক্য গঠণের জন্য বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে জাতীয় কনভেনশন ডাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, হান্নান শাহ্ ছিলেন একজন সৈনিক। তিনি ছিলেন জাতীয় নেতা। স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি জিয়াউর রহমানের সাথে রাজনীতি করেছেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন সভাপতিত্ব উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনা প্রধান আলোচক বক্তব্যে রাখেন খায়রুল কবির খোকন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ ,শ্রীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট কাজী খান, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির। এছাড়াও গাজীপুর জেলা, কালীগঞ্জ, কালিয়াকৈর, গাজীপুর সদর উপজেলার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধ লক্ষ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারী, দলের স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্ ২০১৬ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফকির আবদুল মান্নান পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রথিতযশা আইনজীবী ছিলেন।
১৯৫৬ সালে হান্নান শাহ্ ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে মেট্টিকুলেশন পাস এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানে বন্দি জীবন কাটিয়ে ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে ফিরে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে থাকাকালীন এরশাদ সরকার এর সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়।
বিএনপিতে যোগদানের পর পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, গাজীপুর জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৯ সালে পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলে তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আমৃত্যু এ পদে বহাল ছিলেন। ১৯৯১ সালে ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে গাজীপুর-৪ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ সালে মঈন-ফখরুদ্দিনদের ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময়ে বিএনপির পক্ষে সাহসী ভূমিকা রাখেন। তাকে বিএনপির দু:সময়ের কান্ডারী বলা হয় থাকে। সেই সময়ে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে যারা মাইনাস করতে চেয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখে তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।
এএজেড