৪ বছরেও শেষ হয়নি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ!
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে ঠিকাদারের গাফিলতিতে চার বছরেও শেষ হয়নি মনোয়ারা সিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ। পুরাতন ভবনে জরাজীর্ণ কক্ষে পাঠদানে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষকদের ও ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতসহ নানাভাবে যোগাযোগ করলেও মেলেনি কোন সুফল।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ উপজেলার মনোয়ার শিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩০ জন। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন হওয়ায় গত ২০১৮ -১৯ অর্থ বছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি উর্ধ্বমুখী দ্বিতল ও তিনতলা ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি ১৮ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় মাদারীপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলিয়াস আহমেদ কনস্ট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে ভবন নির্মাণ করলেও চার বছর অতিবাহিত হলে এখনো প্রায় ৪০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আজ (২৯ আগস্ট) সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ও একটি টিনশেডের কক্ষে গাদাগাদি করে ক্লাস হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।
ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, এতদিনে জরা জীর্ণ ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায়। গাদাগাদি করে ঝুঁকিতে ক্লাস করছি। একটি টিনশেডের রুমে ক্লাস হচ্ছে আরেকটি ভবনে। রুমের জানালা নেই, ফ্যান নেই, প্রচন্ড গরমে ঝড় বৃষ্টি হলে পানি পরে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে, ক্লাসও করতে পারছি না স্যারদের ও সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি ঠিকাদারকে দ্রুত ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য বার বার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন টিনসেট কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় ছাত্রীরা খেলাধুলাও করতে পারছে না। পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, সমস্যা উত্তরণে আমি ঠিকাদারকে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগ সহ ফোন করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না। চার বছরেও ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে আছে। অবিলম্বে নির্মাণ কাজের দাবি জানান তিনি।
জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলিয়াস আহমেদ কনস্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরকারি প্রকৌশলী এটিএম জাহিদ বলেন, সঠিক সময়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ হ্যান্ড ওভার না করাতে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা ওই প্রতিষ্ঠানকে অফিসে ডেকেছিলাম আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আজ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। যেহেতু ওই প্রতিষ্ঠানের কাজ অনেকাংশই হয়েছে সেহেতু রি- টেন্ডারের সুযোগ নেই।
এএজেড