সেনাবাহিনী দেশ ও জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামীর সেনাবাহিনী যুগোপযোগী হবে। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে। প্রতিটি সেনা সদস্যের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দেশ ও দেশের জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ৮৬তম লং কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত 'রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ' অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সেনাপ্রধান।
এসময় সেনাবাহিনী প্রধান আরো বলেন, বিএমএ যখন প্রথম প্রতিষ্ঠা হয় তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- 'এই প্রতিষ্ঠান একদিন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে গোটা বিশ্বের নজর করবে।' বিএমএ এখন বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। মিলিটারি একাডেমির এখনকার যে 'স্ট্যান্ডার্ড' সেটি নিশ্চিতভাবে আন্তর্জাতিক মানের। এখানে বিদেশি ক্যাডেটরা এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি কমিশন লাভ করে নিজ দেশের বাহিনীতে যোগদান করছে। যা গত কয়েক বছর ধরেই চলে আসছে।
বৃহস্পতিবার এই কুচকাওয়াজেও যেসব ক্যাডেটরা কমিশন পেয়ে অফিসার হলেন, আমরা তাদের অতি উচ্চমানের কুচকাওয়াজ দেখলাম। এই কুচকাওয়াজ দেখতে এসেছেন পাঁচটি দেশের মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্টরা ও সিওরা লিওনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান। এই বিদেশী অতিথিরাসহ সকলেই বিএমএ'র প্রশিক্ষণ এবং গুণগত মান নিয়ে ভূয়সি প্রশংসা করছেন।
এখানকার প্রশিক্ষণ নিয়েই আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উচ্চমানের পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলে জাতিসংঘসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূয়সি প্রশংসা করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পূর্বের তুলনায় এখন অনেক চৌকস এবং আধুনিক বাহিনী। বিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সেনাবাহিনী এখন অত্যন্ত দক্ষ, চৌকস এবং সদা প্রস্তুত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, বর্তমান বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব। বাংলাদেশ স্মার্ট হওয়ার পথে এগোচ্ছে। তার সঙ্গে মিল রেখে আমরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমেও সেভাবে এগোচ্ছি। ইতিমধ্যেই আমাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সহ নতুন নতুন তথ্যপ্রযুক্তি সংযোজন করা হচ্ছে। আমাদের অফিসাররা এই সকল প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যুগোপযোগী ভাবে সক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, মনে রেখো একজন সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে কার্যকর নেতৃত্বের পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সততা ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। অধীনস্থদের সঙ্গে সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। সহমর্মিতা নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সেনাবাহিনীর কোয়াটার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মজিবুর রহমান, আর্টডকের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, বিএমএ কমান্ড্যান্টসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।