বাম্পার ফলন, দামও বেশি; কৃষকের মুখে হাসি
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় টমেটোর বাম্পার ফলন ও ভাল দাম থাকায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় জেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলায় হাইব্রিট জাতের টমেটোর বাম্পার ফলনসহ বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষিরা লাভ হচ্ছে।
সরেজমিনে চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে কোনো জমি আর পতিত নেই। বিস্তৃর্ণ জমিতে টমেটোর গাছের পরিচর্যা করছেন কৃষকরা। আবার অনেকে গাছের টমেটো তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
অধিক লাভের আশায় প্রান্তিক চাষিরা আগাম হাইব্রিট জাতের টমেটোর চাষ করছেন। শীত মৌসুমে আগাম টমেটো চাষে নানামুখী ঝুঁকি থাকলেও জেলা ও উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষিরা বিভিন্ন চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় টমেটোর চাষাবাদ করেছে। যেসকল চাষির নিজস্ব জমি-জমা নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে টমেটোর চাষাবাদ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভাল দাম থাকায় টমেটো বিক্রি করে কৃষকরা স্বস্থি প্রকাশ করছেন। প্রতিদিন কুড়িগ্রাম জেলা শহরসহ পাশ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাট থেকে পাইকাররা ফুলবাড়ীসহ বিভিন্ন উপজেলায় এসে প্রান্তিক চাষিদের কাছে পাইকারী মুল্যে মণ প্রতি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় টমেটো ক্রয় করছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামের সন্তোষ চন্দ্র বর্মন ও গোরকমন্ডল এলাকার আনছারুল হক জানান, তারা দুই জনেই বিগত ১০ থেকে ১৭ বছর ধরে টমেটোর চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে টমেটোর চাষাবাদ করতে খরচ হয় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ভাল ফলন ও দাম ভাল থাকলে খরচ বাদে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এ বছর তারা প্রত্যেকেই দুই বিঘা জমিতে টমেটোর চাষাবাদ করেছে। তারা আরও জানান, ফলন ভাল হলেই প্রতি বিঘা জমি থেকে টমেটো আবাদে ১২০ থেকে ১৩০ মণ পর্যন্ত আসে। সব মিলিয়ে এবছর টমেটোর বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়া আমরা খুশি।
নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লবেরখাষ গ্রামের আজগার আলী ও মাসুম আলী জানান, তারাও প্রত্যেকেই দেড় বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ করেছে। অনুকুল আবহাওয়া থাকায় এ বছর টমেটোর কোনো রোগ হয়নি। ফলনও গত বছরের চেয়ে ভালই হয়েছে। এ পর্যন্ত তারা ৪০ হাজার টাকা টমেটো বিক্রি করেছেন। এরকম বাজার দর থাকলে দেড় বিঘা জমির টমেটো ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ আব্দুর রশিদ, এ বছর ৯ উপজেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষাবাদ হয়েছে। জেলা-উপজেলার কৃষি অফিসের পরামর্শ ও আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে । ভাল দাম থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এছাড়াও টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় চলতি মৌসুমে যথেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
পিআর/