ফুলের দাম চড়া, তবুও প্রস্তুতিতে ব্যস্ত নওগাঁর দোকানীরা
ফুলের ডালা সাজাতে ব্যস্ত কারিগর । ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
একুশে ফ্রেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নওগাঁর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত হাজারো মানুষ। চলতি মৌসুমে ফুলের দাম বেশ চড়া। গত এক সপ্তাহ আগে ভালো গোলাপের দাম ছিল ৪০ টাকা, সেই গোলাপ এবার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়! সে সঙ্গে প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা মতো ফুল সংগ্রহেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
প্রতি বছরের মতো এবছরও এ উপলক্ষকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে শহরের পুরাতন হাসপাতাল রোডে ফুলেরবাজার। তবে এবার দাম একটু বেশিই মনে হয়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায়।
সরজমিনে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফুলেরবাজারে গিয়ে দেখা যায়, পহেলা ফাগুনের এক সপ্তাহের পর আসছে একুশে ফ্রেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতি বছরের মতো এবছরও এসব উপলক্ষকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে ফুলেরবাজার।
তবে নানা ধরনের ফুলের সমারোহে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা বানিয়ে নিচ্ছেন ফুলের ডালা, তোড়া, কেউ কিনছেন ফুল। সব মিলিয়ে চাঙা নওগাঁর অন্যতম ফুলের এ বাজার। দোকানের পাশাপাশি রাস্তায় বসেও ফুলের ডালা, তোড়া বানাতে ব্যস্ত কারিগররা। পুরান হাসপাতাল রোড এখন ফুলময়।
কথা হয় মাধবী ফুলঘরের এমদাদুল হক বিপ্লবের সঙ্গে। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ব্যক্তিগত ক্রেতার চেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোম্পানির লোকজন বেশি ফুল কিনছেন। তারা শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে ফুলের ডালা নিয়ে যাচ্ছেন, অনেকে অর্ডার দেন সকালের জন্য। সে অনুযায়ী কারিগররা ব্যস্ত ফুলের ডালা, তোড়া তৈরিতে।
ফুল ধরে ধরে দাম জানিয়ে ওই ব্যবসায়ী বলেন, গত পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবসে নওগাঁয় গোলাপের সবচেয়ে ভালোটার দাম ছিল ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সেটা এখন ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। গাদা ফুল গত কয়েকদিন আগে ছিলো পঞ্চাশ পয়সা। সেটা এখন ১ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আমরা গোলাপ ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করছি। অর্থাৎ সব ফুলের দাম গত কয়েকদিনের তুলনায় প্রায় বেশি।
ফুল ঘর এন্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দোকানি মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, ফুল বিক্রির চাপ পড়ে সন্ধ্যার পর। ফুল, বাঁশের চাটাই আর শোলায় তৈরি হচ্ছে ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের তোড়া। এবার কিছুটা বেশি দামে ফুল কিনতে হয়েছে, তাই একটু রকম ভেদে ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা বেশি দামে তোড়া বিক্রি করতে হচ্ছে।
ফুলের তোড়া তৈরিতে নিয়োজিত সজিব ঢাকা প্রকাশ-কে বলেন, প্রতি বছর এ সময়ে দোকানদাররা পুরো বছরের ব্যবসা করেন। সে কারণে কাজের চাপও বেশি। সকাল থেকে টানা তোড়ার কাজ করছি। এত কাজের চাপ যে কথা বলার সময়ও পাচ্ছি না। তিনি বলেন, 'ডিজাইন ও আকারভেদে ১৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে ফুলের ডালা বিক্রি হচ্ছে।
ফুলের তোড়া কিনতে এসেছেন নওগাঁ সরকারি কলেজের পক্ষে প্রফেসর এম এম মোজাফফর হোসেন। তিনি বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কলেজের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে যাব, সে লক্ষ্যেই ২১ টি ফুলের তোড়া কিনতে আসা। দোকানিরা দাম চাচ্ছেন অতিরিক্ত। এরই মধ্যে দরদাম করে এক হাজার পাঁচ শত টাকায় ২১ তোড়া কিনেছি।
আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া প্রতিধ্বনি মাল্টিমিডিয়া স্কুলের পক্ষে তোড়া কিনতে আসেন প্রধান শিক্ষক আসলাম হোসেন মৃধা বলেন,এবার ফুলের তোড়ার দাম অনেক বেশি। মাঝারি আকারের তোড়া তৈরি করে নিলাম আড়াই হাজার টাকা দিয়ে। এবার ফুলের দাম তুলনামূলক চড়া।
যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে পালনে নওগাঁয় কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি এবং বিভিন্ন সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি দিবসটি সুষ্ঠুভাবে পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।