বগুড়ায় ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
ছবি: সংগৃহীত
বগুড়া শহরে “পূর্ব শত্রুতার জেরে” আরিফ মণ্ডল (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত আরিফ মণ্ডল ছুরিকাঘাতের ঘটনায় প্রায় দেড় মাস জেল খেটে ১২ দিন আগে জামিন পেয়েছিলেন। তার বাড়ি বগুড়ার নিশিন্দারার মন্ডলপাড়ায়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি হাঁসুয়া ও কয়েকটি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরিফ একটি ছুরিকাঘাতের মামলায় গ্রেফতার হন ও ১০-১২ দিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, আরিফ মণ্ডল বগুড়া শহরের নিশিন্দারা মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা, পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল ইসলামের প্রথম পক্ষের সন্তান। তিনি মা তইরন বেগমকে নিয়ে সুলতানগঞ্জপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
প্রায় দুই মাস আগে আরিফ নিশিন্দারা খাঁপাড়া এলাকায় এক যুবককে ছুরিকাঘাত করেন। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় দেড় মাস জেলে ছিলেন। ১০ দিন আগে জামিনে ছাড়া পান। এছাড়া শহরের নূরানী মোড় এলাকায় এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন মেয়েকে ধরে নিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেন। এ নিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে তার টানাপোড়েন চলছিল।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আরিফ শহর থেকে সুলতানগঞ্জপাড়ার ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির গলির মুখে পৌঁছলে মোটরসাইকেলে আসা ৮-১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত তাকে ধাওয়া করে। তখন তিনি প্রাণ বাঁচাতে নামাজগড়ের দিকে দৌড় দেন। নামাজগড় মোড়ের আগেই তিনি একটি গলিতে ঢুকে পড়লে হামলাকারীরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মোটরসাইকেল ও দৌড়ে পালিয়ে যায়।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় জানান, নিহত আরিফ তাদের সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিলে শহরের নিশিন্দারা মণ্ডলপাড়া এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে বালু ব্যবসায়ী হজরত আলী মণ্ডলকে (৩৫) বাড়ি থেকে ডেকে এনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুন বগুড়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জহুরুল ইসলামকে (নিহত আরিফ মণ্ডলের বাবা) প্রধান আসামি করে ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। হজরত আলী পৌরসভা নির্বাচনে জহুরুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাদের দুজনের মধ্যে ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল।
নিশিন্দারা উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর জালাল উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি হাঁসুয়া ও কয়েকটি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার বিকালে সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য এসেছে। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হবে না। একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।