হালদায় ডিম ছাড়ছে মা মাছ
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউস) মা মাছেরা ডিম ছেড়েছে। নদীর ৪-৫টি পয়েন্টে ডিম ছাড়ে মা মাছ।
বুধবার (১৭ মে) জোয়ারের সময় রাত সাড়ে ১১টায় এবং ভাটার সময় দিবাগত রাত ৩টার দিকে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম ছাড়ে মা মাছ।
হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের রামদাসমুন্সির হাট, মাছুয়াঘোনা, আমতুয়া ও গড়দোয়ারা ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকায় বেশ কিছু নমুনা ডিম পেয়েছেন সংগ্রহকারীরা। হালদা নদী দেশের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, এবার নির্ধারিত সময়ের বেশ পরে ডিম ছাড়া শুরু হয়। প্রতিবছর এপ্রিলের শুরু ও মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে কয়েকবার ডিম ছাড়ে মা মাছ। ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছর তীব্র দাবদাহ ও ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে হালদা নদীতে লবণাক্ততার কারণে ডিম ছাড়তে দেরি হয়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন, মা মাছ ডিম ছেড়েছে। এর মধ্যে বুধবার রাতে উপজেলার দুই থেকে তিনটি স্থানে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে। ডিমের পরিমাণ ছিল খুবই কম। বিষয়টির উপর আমরা নজর রাখছি।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এবার দেরিতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। প্রচণ্ড দাবদাহতো আছেই। অনাবৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব। তীব্র দাবদাহে নদীতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই নমুনা ডিম ছাড়তে দেরি করেছে মা মাছ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, হালদা নদীতে ২০২২ সালে মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৬ হাজার কেজি। এর আগে ২০২১ সালে ছিল ৮ হাজার ৫০০ কেজি। ২০২০ সালে নদীতে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৫ হাজার কেজি। ২০২০ সালে সংগ্রহের পরিমাণ এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রতিবছর হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম ঘিরে দুই পাড়ে উৎসবের আমেজ দেখা দেয় জেলেদের মাঝে। প্রতিবছর ৪০০ থেকে ৫০০ নৌকায় ৭০০-৮০০ ডিম সংগ্রহকারী মা মাছের নিষিক্ত ডিম ধরার অপেক্ষায় থাকেন। জেলেদের পাশাপাশি মৌসুমি ডিম সংগ্রহকারীরাও যুক্ত থাকেন।
এসজি