ঠাকুরগাঁওয়ে ওসির বিরুদ্ধে ২ যুবলীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগ
অন্যায়ভাবে ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক ও ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকিকে থানায় আটকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বিরুদ্ধে।
জেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা ওসি কামাল হোসেনের কঠোর শাস্তি ও প্রত্যাহারের দাবি জানান।
নির্যাতনের ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২ মে) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দেন নেতারা।
যুবলীগ নেতা-কর্মীদের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার চত্বরে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা দেখতে যান যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকি। এসময় হট্টগোল সৃষ্টি হলে তিনি বাধা দেন এবং ঝগড়া নিরসনের চেষ্টা করেন। এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কোনোকিছু না শুনে যুবলীগ নেতা রকিকে মারধর শুরু করে এবং পুলিশ ভ্যানে করে তাকে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক।
এসময় পুলক সদর থানার ওসি কামাল হোসেনকে তাকে আটকের বিষয়ে ও মারধরের কারণ জানতে চাইলে ওসি উল্টো তার উপর চড়াও হন এবং দুইজনকেই থানায় নিয়ে যান। এরপর থানায় নিয়ে চোখে গামছা পেঁচিয়ে ও হাতে হাতকড়া পরিয়ে পুলককে বেধড়ক পিটিয়ে তার বাঁ হাত ভেঙে দেন। একপর্যায়ে তারা নিস্তেজ হয়ে পড়লে মধ্যরাতে তাদের ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় এবং পরদিন তাদের দুজনের নামে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারায় মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য দেবাশীষ দত্ত সমীর বলেন, সদর থানার ওসি অন্যায়ভাবে আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক ও ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকিকে বেধড়ক পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে। পুলককে এমনভাবে মারধর করা হয়েছে যে ওর সারা শরীরে রক্তাক্ত ফোলা জখম করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল বলেন, কোনোরকম অভিযোগ ছাড়াই আমাদের দুইজন দলীয় নেতাকে আটক করে থানায় আটক রেখে অমানবিক নির্যাতন করেছেন সদর থানার ওসি। আমরা সাংগঠনিকভাবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় আমরা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জেলা পুলিশের কর্ণধার অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেবেন।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সদর থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, ঘটনার দিন মেলা কমিটি মৌখিক অভিযোগ করেন মেলায় কতিপয় ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে মাতলামি করছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ১৫১ ধারায় মামলা দাখিল করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
এসজি