উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কলেজের পুকুর দখলের অভিযোগ
নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরের সাহাপাড়া এলাকায় সাপাহার সরকারি কলেজের পুকুর ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে সাপাহার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে।
এদিকে সরকারি স্বার্থ রক্ষা এবং জমি দখলের অপচেষ্টা প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন সাপাহার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মজিদুল আলম। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে এই অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত জমি দখল বন্ধে কার্যকর কোনো গ্রহণ করেনি। বর্তমানে পুকুরটির উত্তর-পূর্ব পাশের একটি অংশ বাঁশের খুঁটি পুঁতে মাটি ভরাট কাজ চলছে।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে উপজেলা সদরের সাহাপাড়া এলাকায় পাড়সহ প্রায় সাড়ে তিন একর আয়তনের একটি পুকুর দখলে আছে সাপাহার সরকারি কলেজের। তবে পুকুরের উত্তর-পূর্ব পাশের জমি নিজের বলে দাবি করে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পুকুরে বাঁশের খুঁটি পুঁতে দেন। খুঁটি পুঁতে পুকুর দখলের চেষ্টার অভিযোগে কলেজ কর্তৃপক্ষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সাপাহারের ইউএনও ও ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে খুঁটি পুঁতে পুকুরের চিহ্নিত অংশে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন আব্দুর রশিদ।
সাপাহার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মজিদুল আলম বলেন, ‘কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় স্থানীয় ২৪ জন ব্যক্তি কলেজের নামে বেশ কিছু জমি দান করেন। কলেজের নামে দান করা সম্পত্তিতে ১ একর ৪৯ জলাবিশিষ্ট পুকুরটি খনন করা হয়। পুকুরের চারিদিকে পুকুরটির মোট আয়তন ৩ একর ৪২ শতাংশ। এত দিন ধরে পুকুরটি লিজ দিয়ে আসছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এখন হঠাৎ করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সাহেব পুকুরের একটি অংশ তার বলে দাবি করছেন। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নিজের পদ ও দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি জোর করে পুকুর দখল করছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনও ও থানার ওসিকে জানিয়েছি। আশা করি, এটার একটা ন্যায্য প্রতিকার পাওয়া যাবে।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পাড়সহ পুকুরটির ৩ একর ৪২ শতাংশ জমির মধ্যে ১ একর ৭০ শতাংশ অংশের মালিক কলেজ কর্তৃপক্ষ। বাকি অংশের মালিক আমিসহ স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি। ক্রয়সূত্রে ওই পুকুরের সাড়ে ১৩ শতাংশ অংশের মালিক আমি। কিন্তু এতদিন কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের অংশ বুঝে না দিয়ে জোর-জবরদস্তি করে ভোগদখল করে আসছে। মাপ-জোক করে আমার অংশ বের করে নিয়েছি। আমার অংশের প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ জমি পুকুরের জলার মধ্যে পড়ায় সেই অংশটি ভরাট করে নিচ্ছি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সবাই জানেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, সাপাহার সরকারি কলেজের পুকুরটির মালিকানা নিয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির বিরোধ চলছে। পুকুর দখলের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগের বিষয়ে সোমবার (১৩ মার্চ) উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিবদমান উভয়পক্ষকে নিয়ে বসার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সেই চেষ্টা করা হবে।
এসএন