'অন্ধকারে দেশ' বলছে বিএনপি, 'উন্নয়নের রোল মডেল' দাবী আওয়ামী লীগের
নাটোর জেলা বিএনপির দাবী, আওয়ামী লীগের দু:শাসনে দেশ এখন অন্ধকারে। কেননা,দেশে নেই কোন মানুষের অধিকার। এছাড়া নিত্যপণ্যের ক্রমাগত উর্ধমুখী দামে সকল মানুষের নাভিশ্বাস চলছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের দাবী,বর্তমান সরকার দেশে অভূতপূর্ব উন্নায়ন করেছে। এর মাধ্যমে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে শনিবার নাটোর জেলা বিএনপির পদযাত্রা উত্তর সমাবেশের বিপরীতে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে ওই দাবী করেন বক্তারা।
নাটোর জেলা বিএনপির পদযাত্রা উত্তর সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাড. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, এ বছর আওয়ামী লীগের শেষ বছর। আওয়ামী লীগের দিন শেষ। সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
এসময় তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সরকার ও তার দলের লোকজন যতই ভয়-ভীতি দেখাক। আপনারা ভয় পাবেন না। কেননা,এ ১৪ বছর আপনারা অনেক কষ্ট করেছন। অনেক রক্ত ঝরিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নাটোরের সানাউল্লাহ নূর বাবু, রাকিব, সুজনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ভাইদের হারিয়েছি। আমাদের অনেক নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা, নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। তবুও তারা দল ছেড়ে কোথাও যায়নি।
তিনি নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই অন্ধকার কেটে নতুন সূর্য আসবে। এই সূর্য হলো বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র, মানুষের স্বাধীনতা, মানুষের কথা বলার অধিকার। সামনে যত রকম আক্রমণ হোক না কেন আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। বিএনপির নেতৃত্বেই দেশে আবার জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি শনিবার (২৫শে ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকায় জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি ও তত্ত্ববোয়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফার দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে দুলু বলেন, আওয়ামী লীগের দিন শেষ। বর্তমান স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমতা না ছাড়বে, ততক্ষণ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন, তারেক রহমানের আন্দোলন, বিএনপির আন্দোলন এবং জনগণের আন্দোলন চলবেই। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সরকার পতন ঘটানো হবে।
ওই সময় বিএনপি শাসনামলের কথা স্মরণ করে দুলু আরও বলেন, আমরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বার বার ছিলাম। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা, তাদের মিছিলে আক্রমণ, বাড়িঘরে আগুন দেওয়া এ রাজনীতি আমি কখনও করিনি। আমি উপ মন্ত্রী ছিলাম। তারপরি কখনও তাদের মিটিংয়ে হামলা, মিছিলে বাঁধা দেওয়া এমন রাজনীতি করিনি। আজ বড়ই কষ্ট লাগে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করা হয়, বাধা দেওয়া হয়। এমন কাজকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দাও করেন তিনি।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মো. শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর সভাপতিত্বে ওই কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, সাবেক এমপি কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী শাহ্ আলম ও সাবেক মেয়র এমদাদুল হক আল মামুন। জেলা বিএনপির দাবী,ওই কর্মসূচী বানচাল করতে কর্মসূচি শুরুর আগেই ওই এলাকায় ককটেল বিষ্ফোরণ করা হয়।
অপরদিকে জেলা আ'লীগের আয়োজনে একই সময় শহরের কানাইখালী এলাকায় আয়োজন করা হয় শান্তি সমাবেশ। জেলা আ'লীগ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কেন্দীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিল।
ওই সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাটোর-নওগা আসনের এমপি রত্না আহমেদ,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান,জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ,সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিন ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব।
বক্তাদের দাবী, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে দেশে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, দেশ ডিজিটালাইজেশনসহ যোগাযোগের ক্ষেত্রে হয়েছে অভাবনীয় উন্নয়ন। প্রতিটি গ্রাম হয়েছে শহর। বেড়েছে মানুষের কর্মসংস্থান আর আয়। অথচ ওই উন্নয়নের ধারা নষ্ট করতে আন্দোলনের নামে নানা ষড়যন্ত্র করছে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি জামাত। কিন্তু যে নোন মূল্যে ওউ যড়যন্ত রুখে দেয়ার জন্য প্রস্তুত আ'লীগ এমন হুশিয়ারূ উচ্চারণ করেন বক্তারা।
এএজেড