শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্ট্যাম্পে লিখে মহাসড়ক বিক্রি করলেন হকার্স লীগ নেতা

হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যেখানে মহাসড়কের সীমানা হতে ১০ মিটারের মধ্যে হাটবাজার ও বানিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। সেখানে খোদ মহাসড়কের ওপর দোকান গড়ে তা স্ট্যাম্পে লিখে দানপত্র করে প্রতারণার মাধ্যমে মহাসড়কের দোকানের মালিকানা হস্তান্তর করেছেন সাভারের এক হকার নেতা। স্ট্যাম্পে দান পত্র লিখলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতারণার শিকার একাধিক ভুক্তভোগী।

মহাসড়ক বিক্রির মত এমন এলাহী কান্ড ঘটিয়েছেন সম্প্রতি মনোনীত সাভার উপজেলা হকার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল কাদের মোল্লা। তিনি লালমনিরহাট জেলার মৃত গনি মোল্লার ছেলে এবং সাভার পৌরসভার স্মরণিকা এলাকার নূর মোহাম্মদের বাড়ির ভাড়াটিয়া।

স্ট্যাম্পে লিখে মহাসড়ক বিক্রির এমন অবাক কান্ড সবাইকে হতবাক করেছে। শুধু বিক্রি করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। নিচ্ছেন দৈনিক ভাড়া ও মাসিক হারে চাঁদাও। আবার ছয় মাস পর পর তা রিনিউ করতে হয়, না হলে পুরাতন ব্যাক্তিকে উঠিয়ে বসানো হয় নতুন কাউকে। এভাবেই চলছে তার মহাসড়ক বিক্রির মহোৎসব।

অভিযোগ আছে, সাভারের বৃহৎ ফুটপাত চক্রের হোতা আব্দুল কাদের মোল্লা স্থানীয় এক কাউন্সিলর, সাভারের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট অফিসার, হাইওয়ে ও থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ হকারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে নিজেই ভোগ করেন।

সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের ঢাকা আরিচা মহাসড়কের দ্বি-মুখী ফুটপাত জমি বিক্রয়ের মত স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর করে ভাড়া দিয়ে প্রায় ৪ শতাধিক হকার দোকানির কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা এক কালীন আদায় করেছেন। যা তাদের দানপত্রের ভিতরে টাকার অংক উল্লেখ করা হয়নি। এটাই তার দানপত্রের কৌশল বলে জানায় ভুক্তভোগীরা।

বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায় কর্মযজ্ঞ পরিচালনায় কাদের মোল্লার রয়েছে একটি প্রশিক্ষিত বাহিনী। এই দলের অন্যতম সদস্যরা হলেন- জহির, রমজান, পাবেল ওরফে তোতলা পাভেল, আনোয়ার, সুশান্ত, কালা শরীফ, জিয়া, ধলা শরীফ, জুয়েল, ইসরাফিল ও মানিক।

কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আব্দুল কাদের মোল্লা সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার অনেক হকারকে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিন পাতার স্ট্যাম্পে লিখে দান পত্র করে দিয়েছেন। স্ট্যাম্পে দান পত্র লিখলেও টাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। উল্লেখ করা হয়নি দৈনিক হারে নেওয়া লাইনম্যানের বেতনের খরচ বাবদ ৫০ টাকা, পল্লীবিদ্যুতের লাইট খরচ বাবদ ৩০ টাকা, হকার নেতা ও প্রশাসন খরচ বাবদ ১০০ টাকা সহ সর্বমোট ১৮০ টাকা এবং ছয় মাস পর পর রিনিউ করার কথাও।

স্ট্যাম্পে দানপত্র নিয়ে প্রতারণার শিকার মোঃ বুলবুল ঢাকা প্রকাশকে বলেন, আমি পেশায় একজন হকার ব্যবসায়ী। গতবছর (২০২২ সালে) মার্চ মাসে সাভারের হকার সিন্ডিকেট নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার কাছ থেকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাজ্জাক মাছ বাজারের সামনে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের 'সাড়ে তিন হাত' ফুটপাত দোকান আমার বড় ভাই মোঃ সুমনের নামে ক্রয় করি। যা তিনশো টাকার স্ট্যাম্পে অত্যান্ত চতুরতার সাথে টাকার অংক উল্লেখ না করে ফুটপাতের দোকানের মালিকানা হস্তান্তর করেন আব্দুল কাদের মোল্লা।

দোকান নেওয়ার পর নিয়মিত লাইনম্যানের বেতনের খরচ বাবদ ৫০ টাকা, পল্লীবিদ্যুতের লাইট খরচ বাবদ ৩০ টাকা, হকার নেতা ও প্রশাসন খরচ বাবাদ ১০০টাকা সহ সর্বমোট ১৮০ টাকা করে প্রদান করে আসছি । কিন্তু ছয়মাস পরে হঠাৎ করে সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে আবারও এককালীন টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আমাদের দোকান বন্ধ করে দেয় আব্দুল কাদের মোল্লা। পরে দোকান রিনিউ করার জন্য তার ছেলে জহিরুল ইসলামের শরণাপন্ন হয়ে তাঁর নিকট ২০ হাজার টাকা দেই। পরে দোকান খুলতে দেয়।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আবার রিনিউ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বর্তমানে আমার ব্যাবসায়িক অবস্থা ভালো না হওয়ায় তাদেরকে টাকা না দেওয়ায় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। গত ১২ ফেব্রয়ারী আমি প্রতিদিনের ন্যায় দোকান খুলতে গেলে আব্দুল কাদের মোলার নেতৃত্বে জুয়েল ও কাজল সহ অজ্ঞাত ২০-৩০ জন সন্ত্রাসী মিলে আমাকে মারধর করে আমার মালামাল তাদের অফিসে নিয়ে যায়। এরপর থেকে কোনো ভাবেই আমার দোকান করতে পারছি না। আমি দোকান করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করছে। প্রাণের ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। সব মিলিয়ে আমি অনেক অসহায় জীবন যাপন করছি।

অন্য আরেক ভুক্তভোগী শাহিন শেখ ঢাকা প্রকাশকে বলেন, আমি দুই বছর আগে রাজধানীর গুলিস্থান থেকে পাইকারি জামা-কাপড় এনে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে খুচরা বিক্রি শুরু করি। সেখানে প্রথম দিনেই আমার দোকান তুলে দেয় আব্দুল কাদের মোল্লার লোকজন। পরে কাদের মোল্লা আমাকে তার অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন। সেখানে দেখা করতে গেলে তিনি ফুটপাতে দোকান করতে বিভিন্ন দ্প্তর ও প্রশাসনের খরচ বাবদ একটি চার্ট ধরিয়ে দেন।

পরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এককালীন, মাসিক ও দৈনিক চাঁদা দাবি করে। পরে ফুটপাতের জায়গা দলিল করার জন্য ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করতে বাধ্য হই। এবং তাদের দেওয়া চাট অনুযায়ী লাইনম্যানের বেতনের খরচ বাবদ ৫০ টাকা, পল্লীবিদ্যুতের লাইট খরচ বাবদ ৩০ টাকা, হকার নেতা ও প্রশাসন খরচ বাবদ ১০০টাকা সহ সর্বমোট ১৮০ টাকা করে প্রদান করতে থাকি।

এভাবে ছয়মাস পর পর দোকান ভেঙ্গে দিয়ে নতুন জায়গায় দোকান বরাদ্দের কথা বলে ৩০ হাজার টাকা করে দিতে বাধ্য করেন। কিন্তু অন্যান্য হকারদের স্ট্যাম্প দিলেও আমাকে দেয়না। পরে আমি স্ট্যাম্পের কথা বললে দিবে দিবে করে ঘুড়াতে থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে হকার সমবায় সমিতি লিঃ এর নাম করে কাদের মোল্লা ও তার লোকজন মিলে প্রত্যেক হকারের নিকট হতে ৬০ হাজার টাকা করে নিয়ে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার লোভ দেখাচ্ছেন এবংকি এখানকার অনেক রাজনৈতিক নেতার কর্মীকেও এই দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা হচ্ছে। আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমার দোকান উঠিয়ে দিয়ে সেখানে অন্য একজনের দোকান বসিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে আমি থানায় অভিযোগ করলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর থেকে কাদের মোল্লা ও তার রোকজন মিলে অনবরত আমাকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান কালে কাদের মোল্লার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম সদস্য লাইনম্যান জুয়েল আমাকে কিল ঘুষি ও থাপ্পর মেরে স্থান ত্যাগ করতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে ভয়ে আমি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সাভার মডেল থানায় গিয়ে আবারও অভিযোগ দায়ের করি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মোল্লা ঢাকা প্রকাশকে বলেন, আমি স্ট্যাম্পে চুক্তি করে দোকানের মালিকানা হস্তান্তর করেছি। কিন্তু আমি কোন টাকা নেইনি। আর ওখান থেকে আমি কোন প্রকার চাঁদা তুলি না। সরকারি জায়গা স্ট্যাম্পে চুক্তি করে মালিকানা হস্তান্তর করতে আপনি পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৩ শিমুলতলা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো: হারুন অর রশিদ ঢাকা প্রকাশকে বলেন, আমরা অনেকবার অভিযান চালিয়েছি। ওরা আসলে সরাসরি বৈদ্যুতিক তার থেকে হুক লাগিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয় না। কাছাকাছি মার্কেটের মিটার থেকে সংযোগ দেয়। আমরা অভিযান চালিয়ে কয়েকবার সেইসব লাইন কেটে দিয়েছি।

মিটার থেকে লাইন নিলেও তো সেটা অবৈধ, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে ফুটপাতে দোকান বসাই তো অবৈধ। প্রশাসন যদি ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ করে দেয় তাহলে তো লাইটের দরকার হয় না। তাই আমিও ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্ট্যাম্পে লিখে সড়ক বিক্রির ব্যাপারে সড়ক ও জনপদের কল্যাণপুর উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: মারুফ হাসান বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই, এ কথা আমি প্রথম শুনলাম। আমি তো স্ট্যাম্পের লিখা দেখে অনেকটা অবাক হয়েছি। এই সড়কের দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমি নিজে চারবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু ভ্রাম্যমান দোকান গুলো অভিযানের দুইদিন পরে তারা আবার বসে পরে। যার ফলে আমাদের অভিযান সফল হয় না।

তিনি আরও বলেন, সরকারি মহাসড়কের মধ্যে যদি কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরী করা হয়, তা আসলে সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি অতিদ্রুত বিষয়টি তদন্তের জন্য লোক পাঠাবো। স্ট্যাম্পে এই জায়গাটা আমাদের মহাসড়কের সাথে সর্ম্পকৃত কিনা। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক ঢাকা প্রকাশকে বলেন, ওটা থানা পুলিশ দেখে। একবার আমরা অভিযান চালাতে গিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। তারপর থেকে আমরা আর একা অভিযান চালাই না। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সাথে সমন্বয় করে অভিযান চালাই।

হাইওয়ে থানা পুলিশের নামে চাঁদা তোলা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরকম কোন কিছুর সাথে আমি বা আমরা যুক্ত নই। ওইদিকে আমরা যাই না। আব্দুল কাদের মোল্লার চাঁদাবাজির ব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এমন চাঁদাবাজির কোন সুনিদৃষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা নেওয়া হবে।
এএজেড

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির কাঁধে এখন অনেক দ্বায়িত্ব। এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা বিএনপি কে নিয়ে।  সুতারাং দেশের মানুষের আকাঙ্খা অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের আচরন করতে হবে। তৈরী হতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,  অন্তবর্তী সরকারকে বুঝতে হবে জনগন কি চায়। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সব সংস্কার অন্তবর্তী সরকারের দ্বারা সম্ভব নয়। তারা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তারপর নির্বাচিত সরকার বাকী সংস্কার করবে।

এ সময় দ্রুত নির্বাচনের দেয়ার  দাবী জানান তারেক রহমান। 

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং আনন্দ মুখর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার সময় স্থানীয় টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করতে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গনতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।

এসময় তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন গুম ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশকে দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মোকাবেলা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর এটা করতে হলে অবিলম্বে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার।

শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। এরপরে সম্মেলনের উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সম্মেলনে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, এড.নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিথা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা, জেলা জাসাসের সভাপতি সেলিমুল হাবিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ।

সম্মেলনের একপর্যায়ে জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। 

সম্মেলনে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আজকের সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Header Ad

'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচনি সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‌'স্থানীয় নির্বাচন করার ফলে আমাদের কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে। টেস্ট হয়ে যাবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে যে সাপোর্ট দরকার হবে, তাও নিশ্চিত হয়ে যাবে।'

শনিবার (২৩ নভেম্বর) ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচনি সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ।

এ সময় তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের অভিমত হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। কারণ, স্থানীয় নির্বাচন করার ফলে আমাদের কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে। টেস্ট হয়ে যাবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে যে সাপোর্ট দরকার হবে, তাও নিশ্চিত হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনের আগে যদি জাতীয় নির্বাচনে যাই, তাহলে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তা ঝুলে যাবে। কারণ এখন আমাদের যে চিন্তা-ভাবনা, স্থানীয় নির্বাচন যেটা আছে সেটা কোনো সিস্টেম না। আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান, আলাদা আলাদা আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। কোনো কমপ্রিহেন্সিভ সিস্টেম নাই। এই সংস্কারের বড় কাজ হবে একটা সিস্টেম ডেভেলপ করে দেওয়া। এখন সিস্টেম কী হবে? যে সিস্টেম আছে সেটা আইয়ুব খানের ভাবনায় রেখে করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ১০ বছর পরে উপজেলা, তার ১০ বছর পর উপজেলা পরিষদ হয়েছে। এতে কম্প্রিহেন্সিভ কিছু হয়নি। এই সিস্টেম করার জন্য এখন মোক্ষম সময়। কেননা, বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার কিন্তু নেই। কেবল ইউপি আছে। কাজেই ছবি আঁকার এটাই সময়। আমরা যদি সিস্টেম করতে পারি যে, একটা কম্প্রিহেন্সিভ আইন হবে। সেই আইনের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠান চলে আসবে। এতে একটা তফসিল দিয়ে সবগুলো নির্বাচন করতে পারব।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, কমিশন যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তাতে স্থানীয় সরকারের পাঁচ স্তরের নির্বাচন ব্যয় অনেক কমে আসবে। বাঁচবে সময়। অপেক্ষাকৃত অনেক কম জনবল লাগবে।

তিনি আরও বলেন, হিসাব করে দেখেছি, গত কমিশন যে স্থানীয় নির্বাচন করেছে এতে ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১৯ থেকে ২০ লাখ লোক লেগেছে। ২২৫ দিনের মতো সময় লেগেছে। তাই স্থানীয় নির্বাচনে যদি পার্লামেন্টারি সিস্টেম নিয়ে আসি। তাহলে ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনে একই সিস্টেম করতে পারব। তাহলে খরচ চলে আসবে ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে। লোক লাগবে আট লাখ। সময় লাগবে ৪৫ দিন। তাহলে এই সিস্টেমে যাওয়ার জন্য অধ্যাদেশ করে যদি যান তাহলে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব। বর্তমানে যা আছে তা দিয়ে যদি স্থানীয় নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাঁচটা আইন দিয়ে পাঁচটা নির্বাচন করতে হবে। এতে জাতীয় নির্বাচনের আগে তা করা সম্ভব কি-না, তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, পার্লামেন্টের যে মেম্বার তিনি স্থানীয় কোনো দায়িত্বের মধ্যে পড়েন না। তার কাজ হচ্ছে সরকারি কাজগুলো জবাবদিহিতার মধ্যে আনা। উনি যদি সমস্ত উন্নয়ন করেন তাহলে তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট হলো। তিনি জবাবদিহিতা করাবেন কাকে। সুতরাং সংবিধান অনুযায়ী এমপিরা এটা পারে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ