সেচ অভাবে পতিত দেড়শ বিঘা, কৃষকের মানববন্ধন
পল্লী বিদ্যুত একটি সেচ পাম্পের জায়গার মালিকানা পরিবর্তনের অজুহাতে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সেচে অভাবে অনিশ্চয়তায় দেড়শো বিঘা জমির বোরো আবাদ। সরজমিনে বিভীষণ গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণা মৌজার প্রায় দেড়শো বিঘা জমি পতিত হয়ে পড়ে আছে সেচের অভাবে। সীমান্তবর্তী এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এ মৌসুমে বোর আবাদ করতে গিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন এখানকার কৃষকরা।
এই মাঠের সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। ফলে বোরো চাষাবাদে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ৫০-৬০ জন কৃষক। সেচের অভাবে করতে পারেনি তাদের ১০০-১৫০ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ। পতিত জমিতে দাড়িয়ে রবিবার দুপুরে করেছেন মানব্বন্ধন। বিভিষন গ্রামের মজিবুর রহমান জানান, নঁওগা জেলার সাদরুল আমিন চৌধুরী নামে এক ব্যাক্তি জমি ছিলো ওই এলাকায়, তিনি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ২০১১ সালে তার জমিতে সেঁচের জন্য গভির নলকুপ স্থাপন করেছিলেন।
এরপর তিনি তার অধিকাংশ জমিই বিক্রি করে দেন, সেই সাথে গভির নলকুপটিও এব্রাহিম নামে একজনকে হস্তান্তর করেন। গভির নলকুপটির চালক এব্রাহিম বলেন, সাদরুল চৌধুরী জমি বিক্রির পর ডিপটি আমাকে স্ট্যাম্প করে দিয়েছিলেন। তবে কারেন্টের মিটার পরিবর্তন করা হয়নি। পল্লী বিদ্যুৎ এর লোকজন এসে লাইন কেটে দেয়। তখন তারা বলেছে যে ডিপের (গভির নলকুল) মালিকানা পরিবর্তন করতে হলে, আগে জানাতে হত, এখন অফিসে যোগাযোগ করিও। এরপর অফিসে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এদিকে পানি ব্যাগর ধান লাগাতে পারছে না সবাই।
ওই এলাকার বাসিন্দা ও গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান নূহ বলেন, আমার কাছে ৪০-৬০ জন কৃষক এসেছিলো, পল্লী বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়ায় জমিতে সেঁচ দিতে না পারার কথা বলতে। আমার প্রশ্ন যেখানে প্রধানমন্ত্রী একইঞ্চি মাটিও যাতে ফাঁকা পড়ে না থাকে সে দিকে খেয়াল করতে বলছেন, এমনকি তিনি বাসা বাড়ির ছাদেও ফসল করতে বলছেন, সেখানে শত শত বিঘা জমি পল্লী বিদ্যুৎ এর সিদ্ধান্তহীনতায় সেঁচের অভাবে পতিত আছে এটা দু:খজনক। তারা বিকল্প কোন ব্যবস্থা নিতে পারত, কৃষকদের আবাদের সময় পার হয়ে যাচ্ছে, কিন্ত কিছুই করেনি।
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে, পল্লী বিদ্যুৎ নাচোলের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুভন কুমার মহন্ত বলেন, সেখানকার গভির নলকুলের বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংযোগের মালিকানা জটিলতায় সংযোগটি বিচ্ছন্ন করা হয়েছিলো, চলমান বরো আবাদে সেঁচ সুবিধা নিশ্চিত করতে দ্রুতই বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। কৃষকরা যাতে তাদের চাষাবাদ করতে পারেন, সেই লক্ষে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা খাতুন।
এএজেড