চাঁপাইনবাবগঞ্জে শত্রুতা করে ৫৭ গাছ কর্তন
নতুন করে আম চাষি হলেন নুরুজ্জামান ইদুল। তিন বছর আগে আমের বাগান গড়ার স্বপ্ন নিয়ে চার বিঘা জমিতে কাটিমন আমের ৭০০টি চারা গাছ রোপন করেছিলেন তিনি। নিজ হাতে বাগানে লাগানো চারা গাছগুলোর যত্ন-পরিচর্যা করতেন। এভাবেই তার বাগানের লাগানো চারা গাছগুলো তিল তিল করে বেড়ে উঠে। কিন্তু দিবাগত রাতে কে বা কাহারা ইদুলের আম বাগানের ৫৭টি গাছ কেটে ফেলেন।
এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন ইদুল। তিনি বলেন, 'বাগানের চারা গাছগুলোকে নিজের সন্তানের মতো যত্ন নিয়ে, ছ্যালা (ছেলে) মানুষ করার মতন করে মানুষ করেছি। দেখতে দেখতে গাছগুলোর বয়স হলো তিন বছর। বাবা মারা যাওয়ার পর নিজের ভাগে পাওয়া জমিতে গাছ লাগিয়ে বাগান করতে শুরু করি। আমাদের এই জমিগুলো আগে বর্গাদার চাষীরা চাষ করত। এখন আমি নিজে ভাগিদারদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে বাগানকে আরও বড় করার চেষ্টা করছি। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সকাল বেলায় গাছের পরিচর্যা করতে বাগানে আসি। কিন্তু আজ (১৭ জানুয়ারী) সকালে বাগানে এসে দেখি, গত রাতে কে বা কাহারা আমার বাগানের ৫৭টি গাছ গোড়া থেকে কেটে ফেলেছে। আমার ভালোবাসা ও মমতায় বেড়া উঠা গাছগুলোকে হত্যা করেছে। যারা আমার বাগানের গাছগুলো কেটে হত্যা করেছে আল্লাহ্ তুমি তাদের বিচার করিও।‘
সরেজমিনে ইদুলের আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের ছোট গাছগুলোর কোনো কোনোটিতে মুকুল এসেছে আবার কোনো কোনো গাছের মুকুল গুটি বেঁধেছে। বাগানের কাটা গাছগুলো পড়ে আছে সারি সারি লাশের মতো।
বাগানের কেটে ফেলা গাছের দৃশ্য দেখতে আসা মহিদুল বলেন, 'ইদুল খুব যত্ন করে এই গাছগুলোকে হামারঘে (আমাদের) চোখের সামনে মানুষ করেছে। আজ সকালে মাঠে এসে দেখি ৫৭টি গাছ কেটে ফেলে গেছে কে বা কাহারা। দেখ্যা (দেখে) মনটা খুব খারাপ হলো।‘
রনি নামের আরেকজন বলেন, 'কঠিন পরিশ্রম দিয়ে বাগান তৈরি করার পরে ফল পাওয়া যায়। বাগানে কাটা গাছগুলো দেখে হতবাক হয়ে গেছি। কেন ঘটল সুন্দর গাছগুলোর সাথে শত্রুতা ?'
আগের বর্গা চাষিরা এখন জমি বর্গা চাষ করতে না পেরে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে সন্দেহ নুরুজ্জামান ইদুলের। এ ঘটনায় আলো নামে এক বর্গা চাষিকে অভিযুক্ত করে নাচোল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
গাছ কেটে ফেলা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ইদুলসহ এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান জানান, আমরা ঘটনাস্থল সরেজমিনে ঘুরে এসেছি। অভিযুক্তের সম্পৃক্ততাসহ প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।
এসআইএইচ