নির্বাচন ঘিরে পাঁচস্তরের নিরাপত্তার চাদরে রংপুর
রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নির্বাচনে মাঠের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) থেকে পাঁচ দিনের জন্য মাঠে নেমেছে ৪৪ জন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৩৩ জন এবং ১১ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮৬টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব কেন্দ্রে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা। কেন্দ্রগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও সিসিটিভি ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির পাশাপাশি মাঠে থাকবে ১১ প্লাটুন বিজিবি। এর মধ্যে প্রতি সংরক্ষিত ১টি ওয়ার্ডে ১ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন থাকবে। একই সঙ্গে প্রতি ২টি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে র্যাবের টিম থাকবে বলেও জানা গেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব।
তিনি বলেন, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি মোবাইল ফোর্স থাকবে। এ ছাড়া প্রতি ৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং প্রতি থানায় একটি করে রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতি ২টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১টি করে র্যাবের টিম থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র্যাব-পুলিশের টিম সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে। গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৪ জন অস্ত্রসহ পুলিশ (একজন এসআই বা এএসআই ও ৩ জন কনস্টেবল), ২ জন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার ও ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার ভিডিপি সদস্য (৪ জন মহিলা ও ৬ জন পুরুষ) মোতায়েন থাকবে। ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, মঙ্গলবার রংপুর নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের বাইরে পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ২২৯টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্র থাকবে সিসিটিভির আওতায়। ভোটগ্রহণের শুরু থেকে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পোলিং এজেন্টরা নিজ নিজ জায়গায় বসে থাকবেন। কেউ গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না। আশা করি সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের ২২৯ কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৯টি। ভোটার ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৬ জন, পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০৩ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ১ জন। নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২২৯ জন এবং সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ১ হাজার ৩৪৯ জন। মোট পোলিং অফিসার থাকবেন ২ হাজার ৬৯৮ জন। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল থেকে সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। ভোটকেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় থাকবে।
নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মন্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এসজি