আনোয়ারায় নির্বাচন সহিংসতায় যুবকের মৃত্যু, প্রার্থীর ভোট বর্জন
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু ঘটে।
উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা গ্রামে এ সংঘর্ষে নিহতের নাম ধনঞ্জয় বিশ্বাস অংকুর (২৮)।
এদিকে নির্বাচনী সহিংসতা, জাল ভোট ও অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তিন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী। এরা হলেন- ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়নের বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দীন সুজন, ১০ নং হাইলধর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ সোলাইমান। ২ নং বারশত ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল হক।
ভোট বর্জনের বিষয়ে নাজিম উদ্দীন সুজন বলেন, ‘কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে আমার কর্মীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো হয়েছে। আমার এজেন্টদের জোর করে বের করা দেওয়া হয়েছে। নৌকার প্রার্থী প্রকাশ্যে বলছেন, ভোট দেওয়ার দরকার নাই। ভোট আমরা নিয়ে নেবো।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ওই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মামনুর রশিদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে ভোট বর্জনের বিষয়ে হাইলধর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ সোলাইমান বলেন, ‘চর দখলের মতো কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক ভোট নিয়ে নিয়েছে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা। এরকম হলে তো নির্বাচনের দরকার নাই। তাই ভোট বর্জন করেছি।’
বারশত ইউপির আমিনুল হক বলেন, ‘ভোট গ্রহণের শুরু থেকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন কেন্দ্র দখল করে ভোট জালিয়াতি করেন। বহিরাগত লোকজন এনে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করেন এবং ইউনিয়নের সব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। সকাল থেকে এত বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। এজন্য আমি ভোট বর্জন করেছি।’
স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুরে চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা গ্রামে সিংহরা রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে মেম্বার প্রার্থী রঘুনাথ শিকদার ও অপর প্রার্থী নাজিম উদ্দীনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ধনঞ্জয় বিশ্বাস অংকুর নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অংকুর মেম্বার প্রার্থী রঘুনাথ শিকদারের সমর্থক।
নির্বাচনী সহিংসতায় অংকুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আনোয়ারা থানার ওসি দিদারুল ইসলাম শিকদার। তিনি বলেন, ‘উপজেলা হাসপাতাল থেকে অংকুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশ, বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে আনোয়ারা উপজেলার ১০ ইউপির মধ্যে ৪ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও স্বতন্ত্র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
আইকে/এএন