চুয়াডাঙ্গায় ৩ দিনে ১৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড
চুয়াডাঙ্গায় টানা বৃষ্টিপাতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে এলাকার নিম্নাঞ্চল ও রাস্তাঘাট। গত ৩ দিনে ১৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, দর্শনা ও জীবননগর পৌর এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে রাস্তা গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পাড়া মহল্লার রাস্তা কোমর ও হাঁটু পানি নিচে তলিয়ে গেছে। সে কারনে ইজি বাইক, রিক্সা, মোটরযান চলাচল করতে পারছেনা।
ড্রেন গুলো পরিস্কার না করায় বৃষ্টির পানি বের হতে পারছেনা। কবে নাগাদ রাস্তা ও আবাসিক এলাকা থেকে পানি বের হবে তা পৌর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারছেনা। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জীবননগর বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, জমে থাকা পানি সরাতে পৌর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থাই গ্রহন করেনি। টানা বৃষ্টিতে রাস্তার ওপর ড্রেন উপচে ময়লা পানিতে একাকার হয়ে গেছে।
অস্বস্থিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে গোটা পৌর এলাকা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিপাড়ার বাসিন্দা সংবাদকর্মী উজ্জ্বল মাসুদ জানান, টানা বর্ষনে জমে থাকা পানির ক্ধাসঢ়;রনে ওই এলাকার রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছেনা। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরের গুরুত্বহীনতার কারনে এলাকার আনাচেকানাচে পানি জমে বেশ সমস্যা সৃষ্টি করছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক বলেন, হঠাৎ বৃষ্টির কারনে পৌরবাসীকে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে। কিছু অসচেতন পৌরবাসীর কারনে ড্রেন পরিস্কার রাখা যাচ্ছেনা। তারাই ড্রেনে তাদের ব্যাবহৃত এটাসেটা ফেলে সেটা পানি নিস্কাশনের অযোগ্য করে রেখেছে। তবে আমরা পানি নিস্কাশনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করা যায় এর দ্রুত সমাধান হবে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ২টার পর থেকে থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সে কারনে জনজীবন বির্যস্ত হয়ে ওঠেছে। ভারী বর্ষনের কারনে জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম গতি হারিয়েছে। বেশীভাগ মানুষই সঠিক সময়ে তাদের কর্মস্থলে পৌছুতে পারছেনা। শ্রমজীবী দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ কাজ পাচ্ছেনা।
শ্রমজীবী রিকাত আলী জানায়, বৃষ্টির জন্য কেউ তাকে কাজে নিচ্ছেনা। কাজ না পেয়ে কয়দিন তাকে ফিরে যেতে হচ্ছে। বাজার করার টাকা জোগাড় করতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তার। এদিকে টানা বৃষ্টিতে মাঠের ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মাঠে মাঠে পাকা আউশ ধান ডুবে গেছে বৃষ্টিতে। অনেক কৃষক তার স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারছেনা।
দর্শনা জয়নগরের কৃষক পিন্টু মিয়া বলেন, ২ বিঘা ধান ছিল। মেশিন দিয়ে কেটে ৫ কাঠা ধান ঘরে তুলেছি। বাকী দেড় বিঘা পানিতে ডুবে আছে। কল বেরিয়ে গেছে। তার মতো অনেকেই ধান কাটতে পারেনি। ধান সব বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ সামাদুল হক জানান, সোমবার রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়ে যা বুধবারও অব্যাহত রয়েছে। এদিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত ১৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বোচ্চ।
এএজেড