নাটোরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ছে শীতজনিত রোগ
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
শীতের তীব্র্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে নাটোরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। যার মধ্যে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া আর ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। রোগাক্রান্তদের মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধের সংখ্যার আধিক্য রয়েছে বলে দাবি করছেন চিকিৎসকরা।
ডাক্তার, বেড এর পাশাপাশি তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো। তবে শহরের অবস্থা এখনও স্বাভাবিক-দাবি কর্তৃপক্ষের।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার পরিতোষ কুমার বলেন, ‘সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগী বর্তমানে অতিরিক্ত নয়। এরমধ্যে শিশু ওয়ার্ডে রয়েছে ১৫ জন আর মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪১ জন। রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, এ্যাজমা, ডায়রিয়া রোগী রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ওই রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত নয়। তাদের চিকিৎসা নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৫০ বেডের ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৮৫-৯০ ভাগ বেডে রোগী রয়েছে। এরমধ্যে শীতজনিত রোগী বেশি। বিশেষ করে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ইনডোরে ৪০-৫০ জন আর আউটডোরে ৪০০-৪৫০ জন রোগী দেখছেন তারা। এদের অধিকাংশই শীতজনিত রোগী। তবে সুইপার, নাইটগার্ডর্ড আর তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংকটে চিকিৎসাসেবায় সমস্যা হচ্ছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার ফরিদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে শ্বাসকষ্ট আর ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। ৩১ বেডের মধ্যে ৩০ বেডে রোগী ভর্তি রয়েছে যার মধ্যে শীতজনিত রোগী ২৫ জন। এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও বয়স্ক। অপরদিকে আউটডোরে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ রোগী দেখা হয় যার মধ্যে শীতজনিত রোগী ২০০-৩০০ জন।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার সুরুজ্জামান শামীম বলেন, ৫০ বেডের ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন আসছে শীতজনিত রোগী। এরমধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগী বেশি। হাসপাতালে ৪২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে যার মধ্যে শীতজনিত রোগী ৩০ জন। এদের অধিকাংশই ডায়রিয়া রোগী।
এছাড়া আউটডোরেও শীতজনিত রোগী বেশি আসছে দাবি করে তিনি বলেন, অন্য রোগী তুলনামূলক কম আসায় এখনও চাপ সামলানো যাচ্ছে।
বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার ডলি রাণী বলেন, শীতজনিত রোগের মধ্যে বর্তমানে শিশুদের ডায়রিয়া আর বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন আসা রোগীদের মনে ৪০-৫০ ভাগই শীতজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে৷ এছাড়া আউটডোরেও শীতজনিত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৫-৬ জন চিকিৎসক এ সকল রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।
সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আমিনুল ইসলাম বলেন, শীতজনিত রোগী বেশী হওয়ায় অধিকাংশ সময় ৫০ বেডের ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬০-৭০ জন রোগীকে বেডে রাখতে হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে সর্দি, কাশি ছাড়াও ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টের রোগী বেশী।
আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক দাবি করে তিনি বলেন, ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৪ জন জনবল থাকার কথা, রয়েছে ৫ ডাক্তারসহ ৮ জন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো আরএমও নেই। মেডিকেল অফিসার পদ ৮ টিও কয়েক মাস থেকে শূন্য৷ ১০ জনের জায়গায় রয়েছেন ২ জন কনসালটেন্ট। তার সঙ্গে ইউনিয়নে কর্মরত ৫ জন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে একজনকে আরএমও দায়িত্ব দিয়ে মোট ৮ জন ওই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ইনডোরে ভর্তি রোগীদের পাশাপাশি আউটডোরে ৬০০-৭০০ রোগী দেখতে হচ্ছে যার মধ্যে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি৷
চিকিৎসা সামগ্রীর সমস্যা না থাকলেও জনবল সংকটে অনেক কষ্টে চিকিৎসাসেবা চালাতে হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, তিনি নাটোর থেকে বদলি হয়েছেন। নতুন সিভিল সার্জন যোগদান করলে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যাবে।
/এএন
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)