লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটি মরণ ফাঁদ!
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর লালমনিরহাটের বুড়িমারীর সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক ১০০ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যের লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক। সেই মহাসড়কটি প্রায় ২০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কমবেশি প্রতিদিনই সড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক মালবাহী ট্রাক ও কয়েক হাজার হালকা যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
পরিবহন শ্রমিকরা জানান, মহাসড়কটি ভালো থাকলে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পৌঁছাতে ৩ ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন সময় লাগে ৫ ঘণ্টা। খুব সতর্কতার সঙ্গে মালবাহী ট্রাক নিয়ে চলতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কটির বেহাল দশার কারণে এবং বাড়তি ২ঘন্টার অপচয়ের জন্য অনেক পরিবহন শ্রমিক বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে মালামাল পরিবহন করতে আগ্রহী হচ্ছেন না।
কালীগঞ্জের একজন পথচারী আক্ষেপ নিয়ে জানান, ভুল্ল্যারহাট বাজারে মহাসড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে, যা দেখলে মনে হয় দেশের কোন উন্নয়ন করেনি সরকার। কেননা তার প্রমাণ স্বরুপ লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কটি। আদিতমারীর পথচারীরা জানান, গোটা আদিতমারী বাজারে রাস্তার যা অবস্থা তাথে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমরা জীবন বাঁচার তাগিদে কোন রকম চলাচল করছি। পথচারীরা সড়কটি মেরামতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারি দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কটির বেহাল দশার কারণে তারাও ঠিকমতো চলাচল করতে পারছেন না। মোটরসাইকেলও ঠিকমতো চালাতে পারেন না তারা। দীর্ঘদিন থেকে বেহাল দশায় থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেন না কোন ব্যবস্থা।
বুড়িমারী স্থলবন্দরে ট্রাকচালক খলিলুর রহমান বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে ট্রাক চালানোর সময় অনেক ভয় কাজ করে। কখন দুর্ঘটনা ঘটে কেউ জানেন না। প্রায় ২ ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় লাগে এবং অধিক পরিমাণে তেল খরচ করতে হয়। এজন্য আমরা মাল পরিবহনে ব্যবসায়ীর কাছে বেশি চার্জ নিয়ে থাকি।
বাস চালক অনিন্দ্য বাবু বলেন, মহাসড়কটির দুরাবস্থার কারণে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে বাসের যাত্রীও কমে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে বাস যাত্রীরা চলাচল করতে আগ্রহী হচ্ছে না। এছাড়া গন্তব্যে পৌঁছতে অতিরিক্ত সময়ও লাগছে। আমাদের আয়ও কমেছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবু সাঈদ জানান, মহাসড়কটির বেহাল দশার কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যেও বেহাল দশা তৈরি হয়েছে। সময় মতো পরিবহন সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক ট্রাক চালক এই মহাসড়কে মাল পরিবহনে অনীহা প্রকাশ করছেন। বেশি চার্জ দিয়ে ট্রাক ভাড়া করতে হচ্ছে। ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্ল্যাহ সর্দার বলেন, বিপুল পরিমাণে ওভার লোডেড, ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে মহাসড়কটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংস্কার করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে বিলম্ব করছে। ঠিকাদার যাতে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এএজেড