বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের মুহুর্মুহু গুলি
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আবারও সহিংসতা শুরু করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া মর্টার শেল এসে পড়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে। বাংলাদেশের আকাশসীমা অতিক্রম করে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ করা হয় বলে জানান স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সাড়ে ৯টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়ে দুটি মর্টার শেল।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে মিয়ানমারের পাহাড়ি ‘খা মং সেক’ অঞ্চল। সেখানে ২৩ দিন ধরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের মাত্রা আরও বাড়িয়েছি সেনাবাহিনী। আজ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর কাছাকাছি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান দেখা যায়। হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ, মর্টার শেল ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের ছোড়া গুলি ও মর্টার শেল বাংলাদেশের যে জায়গায় পড়েছে সেখানে তেমন জনবসতি নেই। তবে সেখানে বাংলাদেশের রাবার বাগান থাকায় রাবার শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা তুমব্রু বাজারে চলে আসেন। যুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকায় সীমান্তে বসবাসকারীদের পাশাপাশি শূন্যরেখায় আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আতঙ্কে রয়েছেন।
পুলিশ ও সীমান্তরক্ষা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান যুদ্ধে ব্যবহৃত দুটি মর্টার শেল গত ২৮ আগস্ট নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু গ্রামে এসে পড়ে। মর্টার শেল দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় সেদিন বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু এরপর আবারও বাংলাদেশে এসে পড়ল মিয়ানমারের একাধিক মর্টার শেল ও গুলি।
বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। সেখানকার গোলযোগের কারণে আমাদের সীমান্তে বসবাসকারীরা কিছুটা আতঙ্কে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজও মিয়ানমার সীমান্তে হেলিকপ্টার দেখা গেছে। সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর মাঝামাঝিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ২টি যুদ্ধবিমান এবং ২টি ফাইটিং হেলিকপ্টার দেখা যায়। এসময় যুদ্ধবিমান থেকে আনুমানিক ৮-১০টি গোলা ফায়ার করে এবং হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০-৩৫টি ফায়ার করতে দেখা যায়। সীমান্ত পিলার ৪০ বরাবর আনুমানিক ১২০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধবিমান থেকে ফায়ারকৃত ২টি গোলা পতিত হয়।
এসজি