তিস্তার পানিতে বন্ধ ১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভয়াবহ ভাঙন
তিস্তার পানি কমে বর্তমানে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর পরও লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় এখনও প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। এদিকে বানভাসি মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অপরদিকে আকস্মিক সৃষ্ট বন্যার কারণে গত দুই দিন থেকে জেলার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এতে ইতিমধ্যে প্রায় ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার (৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটারে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দ্দৌলা। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী সাংবাদিকদের জানান, এবারের বন্যায় জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান।
জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাটে জেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চলের ১৫ হাজার পরিবার। হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নদী পাড়ের লোকজনের মাঝে। সেই সঙ্গে গত দুই দিন ধরে তিস্তার ভাঙনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় দুই হাজার পরিবার গত দুই দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছেন। পরিবারগুলোর তালিকা করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়নি।
এদিকে গত দুই দিনে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার প্রায় ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবারগুলো।
মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জি আর সারোয়ার সাংবাদিকদের জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সহায়তার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে তিন হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ