৪ বছর ধরে হেলে পড়ে আছে সেতুটি
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর ইউনিয়নের খাগডহর গ্রামের কাটাখালী খালের উপর নির্মিত সেতুটি নির্মাণের পরের দিন হেলে পড়ে। ৪ বছর ধরে সেতুটি হেলে পড়ে থাকলেও মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে খাগডহর কাটাখালী খালের উপরে নির্মাণ করা হয় এই সেতুটি। এতে ব্যয় হয় ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট।
স্থানীয় কৃষক আকবর আলী বলেন, ‘বন্যার সময় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়। মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরদিনই হেলে পড়ে। এরপর চার বছর কেটে গেলেও নতুন কোনো সেতু তৈরি করা হয়নি।’
ব্যবসায়ী শহিদুল এবং আকরাম হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুর দুই পাশে নামমাত্র মাটি ফেলে কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষ হওয়ার পরদিন বন্যার পানিতে ভেসে যায় সেতুর সংযোগ সড়ক। এরপর ধীরে ধীরে হেলে পড়ে সেতুটি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন দুই পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ।
এ বিষয়ে খাগডহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, চার বছর ধরে সেতুর কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজারো মানুষ। চেয়ারম্যান হিসেবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা ছাড়া আমার কিছু করার নেই। তবে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছেন হেলে পড়া ব্রিজের পাশে নতুন আরেকটা ব্রিজ নির্মাণ করার। সেতুটি হেলে পড়ায় চর জেলখানা ও সিরতা গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের জীবন-জীবিকা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজা বলেন, ‘সেতুটি আমার সময়ে নির্মিত হয়নি। তবে নির্মাণের পরে সেতুটি হেলে পড়ায় ঠিকাদার ১৮ লাখ টাকা বিল পেয়েছিল। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে আবারো নতুন করে সেতুর কাজ শুরু করতে পারে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সেতু হেলে পড়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে এর ফলে মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেটি অবগত রয়েছি। তদন্ত কাজ শেষ হলে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে হেলে পড়ায় সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। দুর্ভোগ কমানোর জন্য আমরাও চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এসআইএইচ/