'বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন রাষ্ট্রকাঠামোর জন্য ভালো নয়'
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোর জন্য ভালো নয়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোতে এই যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনকে উৎসাহিত করা, এটা বোধ হয় সম্ভব নয়, সমীচীনও নয়।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর সার্কিট হাউসে আয়োজিত চতুর্থ দফা ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, পত্রিকামতে ৩৬০ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রায় ১ হাজার ৬০০ জন অন্যান্য প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এটা একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আমাদের চিন্তা করতে হবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন করলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি কি না। ভবিষ্যতে যারা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে আসবেন তারা নিশ্চিয় বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশন সফল কি না, এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, এটি একেকজনের জন্য একেক রকম অনুভূতি। তবে যেহেতু আমরা যে চারজন কাজ করেছি, এখানে কোনো ব্যক্তিগত অনুভূতিকে মূল্যায়ন করা উচিত নয়। এককভাবে আমার কোনো বক্তব্য রাখতে চাই না।
'তবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আর মাত্র ৫৫ দিন। এর আগে আমরা আমাদের দায়িত্ব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে চাই। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে-শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আমরা এই শেষ ভালোটাকে সব ভালোর মধ্যে নিয়ে আসতে চাই,' যোগ করেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, 'আমি চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নির্বাচনের চলমান অবস্থা নিয়ে মতবিনিময় করেছি। এখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, সিএমপি কমিশনার, বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন জেলার প্রশাসকগণ ও রিটানিং অফিসাররা তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে আমাদের কী কী অসুবিধা এবং এ পর্যন্ত যা নির্বাচন হয়েছে তার চাইতে কিভাবে আরও ভালো নির্বাচন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার মনে হয় এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা সবাই উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আগামীতে যে নির্বাচনগুলো হবে সেগুলো সুষ্ঠু এবং আইনানুগভাবে যাতে পরিচালনা করা যায় সে বিষয়ে আমরা সবাই একমত।'
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামে বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও রিটানিং অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।
আইকে/এমএমএ/