নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই খাল খনন, হেলে পড়েছে ভবন-মন্দির
চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট এলাকায় কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই গোলজার খালের খনন কাজের কারণে হেলে পড়েছে দুটি ভবন। দেবে গেছে আরও কয়েকটি ভবন ও মন্দির। ফাটল দেখা দিয়েছে কয়েকটি স্থানে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে খাল পাড়ের লোকজন।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এ খাল খননের কাজ করছে।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, কোনো রকম নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই খাল খননের কাজ করায় আশপাশের মাটি দেবে ভবনগুলো হেলে পড়েছে।
তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম নগরীর মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড সড়কসংলগ্ন পার্বতী ফকির পাড়ায় (জেলেপাড়া) গোলজার খালের খনন কাজ করছে চউক। কিন্তু নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকায় আশপাশের মাটি দেবে চারতলা ও দোতলা দুটি ভবন হেলে পড়েছে। দেবে গেছে স্থানীয় মন্দির। আরও কযেকটি ভবনে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হেলে পড়া ভবন দুটির বসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এনামুল হক।
হেলে পড়া দোতলা ভবনের মালিক স্বপন দাশ বলেন, ‘২০২০ সালের মার্চ মাসে খালের খনন কাজ শুরু হয়। তখন চারতলা একটি ভবন দেবে যাওয়ায় ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে আরও কয়েকটি ভবন দেবে যেতে শুরু করে। আমার দোতলা ভবন ও শ্যামল দাশের চারতলা একটি ভবন খালের সঙ্গে লাগোয়া। সেগুলোও হেলে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালে গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য গভীর পাইলিং করা হচ্ছে। কিন্তু খাল পাড়ের দুই পাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী না দেওয়ায় আশপাশের মাটি দেবে ভবন হেলে যাচ্ছে। ভবন হেলে পড়ার আতঙ্কে আমি নালাপাড়া এলাকায় নতুন বাসা নিয়েছি। এখানে আমার মা-বাবা ও ভাইয়েরা রয়েছেন।’
পশ্চিম মাদারবাড়ি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অংশ হিসেবে গোলজার খালের খনন কাজ চলছে। এতে খালের প্রশস্ত ও গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য প্রায় ৪০ ফুট পর্যস্ত গভীরে পাইলিং করা হয়েছে। ফলে আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ভবন দেবে যায়। কয়েকটি ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন আরও দুটি ভবন হেলে পড়েছে। এসব ভবন যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন সামশ বলেন, খাল পাড়ের স্থাপনাগুলো অবৈধ। বেশিরভাগ ভবনই সিডিএর নকশা বহির্ভুতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইকে/এএন