প্রতিদিন ৭ শতাধিক রোজাদারকে ইফতার করান ফেনীর পৌর মেয়র
ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ব্যক্তিগত ও পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিদিন সাত শতাধিক রোজাদারকে ইফতার করাচ্ছেন।
মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক রোজাদারের জন্য তৈরি হয় ইফতারসামগ্রী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে মেয়রের ব্যক্তিগত অফিসের সামনে থেকে তার এলাকা ও বিভিন্ন মসজিদে বিতরণ করা হয় এসব ইফতার।
রোজায় প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী ছয় লেন উড়াল সেতুর এক পাশে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর লোকজন। সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ির চালক ও যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে হাতে দেওয়া হয় ইফতারসামগ্রী।
প্রতিদিন এখানেই বিতরণ হয় তিন শতাধিক প্যাকেট। বাকি ইফতারের প্যাকেটগুলো বিতরণ হয় বিভিন্ন মসজিদ, এতিমখানা ও এলাকার অসহায় ও গরীবদের রোজাদারদের মাঝে।
মেয়র জানান, ইফতারের এ আয়োজন প্রতি বছরের মতো প্রথম রোজা থেকে শুরু হয়ে শেষ রোজা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে সরেজামিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল থেকেই মহিপাল ফ্লাইওভারের পূর্ব অংশের সড়কে ইফতারসামগ্রীর প্যাকেট নিয়ে রোজাদারদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন মেয়রের স্বেচ্ছাসেবক টিম। বিভিন্ন গাড়ির চালক, পথচারী ও যাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নানা পদের ইফতারির প্যাকেট ও পানির বোতল।
এ ছাড়া ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে তৈরি করা হয় আরও দুইশত মানুষের ইফতার। পৌরসভা প্রাঙ্গণ ও ট্রাংক রোড শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গরীব-অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয় এ সব ইফতারসামগ্রীর প্যাকেট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী জানান, রোজাদারদের ইফতার করানো সাওয়াবের কাজ। সেই চিন্তা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্ষুদ্র এ আয়োজন।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পাশেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। প্রতিদিন এ পথে অসংখ্য যানবাহন ও পথচারী চলাচল করেন। মহাসড়কে রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীরা ইফতার করতে অসুবিধায় পড়েন। তাদের কথা চিন্তা করে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন করে আসছি।
এ ছাড়া যে কেউ চাইলে আমার কার্যালয়ের সামনে বসেও ইফতার করতে পারবেন। যারা নিতে চায় তাদের দেওয়া হচ্ছে প্যাকেটে।
মেয়র মিয়াজী আরও বলেন, সমাজের সব বিত্তবানরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন, তাহলে কোনো রোজাদারই ইফতারের সময় অভুক্ত থাকবে না।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র হওয়ার আগ থেকেই গত কয়েক বছর ধরে তিনি মহাসড়কে যাতায়াতকারী রোজাদারদের ইফতার করিয়ে থাকেন। এ ছাড়া পৌর এলাকার কর্মহীন মানুষদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তিনি। শহরের সবকটি মসজিদের সামনে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য পানির ট্যাংকের ব্যবস্থাও করেছেন মেয়র।
ইফতারসামগ্রী বিতরণের দায়িত্বে থাকা পৌর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাঈন উদ্দিন সুমন বলেন, মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ভাইয়ের অর্থায়নে প্রতিদিন রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করা হয়। সড়কে যাতায়াতকারীরা মেয়রের এ ইফতার পেয়ে অনেকে উপকৃত হচ্ছেন।
মহাসড়কের এক ট্রাকচালক বলেন, মহাসড়কের পাশে বেশিরভাগ মানুষ ব্যবসায় মত্ত থাকে। এক গ্লাস পানিও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। সেখানে ভিন্ন চিত্র ফেনীর মহিপালের এই জায়গার। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে রোজাদারদের ইফতার করানো হয়। এমন উদ্যোগের জন্য তিনি মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
যাত্রীবাহী পরিবহনের যাত্রীরা বলেন, এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। যাত্রা অবস্থায় থাকা মানুষগুলো ইফতার নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েন। ফেনীর মেয়রের এমন উদ্যোগের কারণে ওইসব মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
এমএসপি