বালু বোঝাই ট্রাকের দাপটে সড়কে ধুলার রাজত্ব, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
সিরাজগঞ্জ জেলার উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক-মহাসড়কে আইন অমান্য করে ওভার লোড নিয়ে বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অসংখ্য দশ চাকার ডাম্পার বালু/মাটিবাহী ট্রাক। এসব ট্রাকে বেশিরভাগই বালু বহন করছে। যেগুলোর ওজন সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ টন। এ ধরনের ট্রাক অতিরিক্ত লোড নিয়ে সাধারণ রাস্তায় চলাচল করায় রাস্তা ভেঙে বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিদিন রাস্তায় যানজটের সৃষ্টির পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ পরিবহন চালক, যাত্রী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা সেতু হতে বকুলতলা ব্রিজ এলাকায় ফুলজোড় নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বকুল তলা, হাটকান্দা, ফুলজোড় কলেজ পাড়া পয়েন্টে থেকে এসব ট্রাকে বালু নিয়ে নলকা-হাটিকুমরুল মহাসড়কের কাজে মাটি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ, কামারখন্দ, বেলকুচি কাজিপুর চৌহালি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বালুবাহী ট্রাক।
সরকারি সম্পদের ক্ষতি সাধনে শাস্তির বিধান থাকলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দিন রাত অবাধে চলাচল করছে বালুবাহী মাজদা ট্রাকসহ দশ চাকার এসব ডাম্পার।
এলাকাবাসী জানায়, বালু বহনকারী বেপরোয়া যান চলাচলে ধুলাবালি উড়ে রাস্তার দু’পাশের ঘর-বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই রাস্তায় চলাচলকারী অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল আরোহীসহ পথিকেরা ধুলায় হাবুডুবু খাচ্ছে।
অটোরিকশা চালক জামাল বলেন, 'আমি ফুলজোড় কলেজ হতে গ্রামপাঙ্গাসী পর্যন্ত আঞ্চলিক পাকা রাস্তায় অটোরিকশা চালাই, রাস্তাটি খুবই সরু। তারমধ্যে সব সময় ১০ চাকার ট্রাক চলাচল করায় আমাদের চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ সব গাড়ি চলাচলে রাস্তায় চরম ধুলার কারণে যাত্রীরা আমাদের রিকশায় উঠতে চায় না। মাঝেমধ্যে কলেজ পাড়ায় যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। এর কোনো প্রতিকার না হওয়ায় অটোচালকদের আগের চেয়ে আয় কমে গেছে।
সিএনজি চালক নাসির, মেনহাজ, মান্নানসহ অনেকেই বলেন, কয়েক বছর ধরে নুরনগর চর-নদী হতে বালু তুলে এলাকায় অবৈধ বালুমহাল করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে। গাড়ি চলাচলে এলাকায় ধুলার স্বর্গরাজ্যে পথচারীদের নাভিশ্বাস হলেও এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
স্থানীয় সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তায় ১০ চাকার ডাম্পার ট্রাক চলাচলের কারণে বকুল তলা হতে কলেজ পর্যন্ত পাকা রাস্তা খানাখন্দসহ চরমভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ফুলজোড় কলেজের অধ্যক্ষ সাহেদ আলী জানান, এলোপাতাড়ি গাড়ি চলাচল আর রাস্তাায় প্রচণ্ড ধুলার কারণে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে। নিয়মিত রাস্তায় পানি না দেওয়ার কারণে পথচারীসহ শিক্ষার্থীদের নাকে মুখে ধুলাবালি ঢুকে জ্বর, সদ্দি, ঠান্ডা, হাঁচি-কাশি রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃপ্তি কণা মন্ডল জানান, ওই এলাকার জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টিটি/