আত্মহত্যা করেননি হত্যা করা হয়েছে বেরোবি’র ছাত্র তুষারকে
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের(বেরোবি) শিক্ষার্থী তানভীর আলম তুষার আত্মহত্যা করেননি আঘাতের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ধরনের তথ্য।
নিহত তুষারের বাবা মোহসিন আলী জানান, রংপুর মেডিকেলের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তিনি জানতে পারেন যে তার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে হয়তো রাতের কোনো এক সময় কেউ বাড়িতে এসে তার ছেলেকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে কৌশলে পালিয়ে গিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছেলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্ট অনুসন্ধান করলে হয়তো কোনো ক্লু বের হবে। ছেলেকে কারা হত্যা করল, কখন ছেলের মৃত্যু হলো, কেন ছেলেকে হত্যা করা হলো বিস্তার জানা যাবে। ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার উপ-পরিদশক (এসআই) আবু ছাইম বলেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. ইফফাত শারমিন ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে তানভীর আলম তুষারকে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বাবা মামলা করেছেন গত ৪ মার্চ। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মোহসিন আলীর একমাত্র ছেলে ছিলেন তানভীর আলম তুষার। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
এ ঘটনায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার জানিয়েছিলেন, মোবাইলে জুয়া খেলতেন তুষার। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুষার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে তুষারের মা তাসলিমা বেগমের ভাষ্য, তুষার শান্ত স্বভাবের ছিলেন। এলাকার কারো সঙ্গে জোরে কথা বলতেন না। জুয়া খেলা কী তা তিনি বুঝতেন না। তার বন্ধুরা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাকে মোবাইলে জুয়া খেলায় আসক্তি করে। গত ৫ অক্টোবর তুষার তার এক বন্ধুর বাড়িতে যায়। সেখানে রাত্রীযাপন করে পরদিন বিকালে বাড়িতে আসে। সে সময় ছেলেকে বিষন্ন থাকতে দেখা যায়। পরিবারের সবার সঙ্গে কথাও বলেছে। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ৭ অক্টোবর ঘরে ছেলের লাশ দেখতে পাই।
এসআইএইচ