পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে যেখান থেকে কয়লা আসে
দেশের সবচেয়ে বড় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। কয়লাভিত্তিক এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে প্রতিদিন প্রয়োজন ১৩ হাজার টন কয়লা।
কোথা থেকে আসছে এ কয়লা- এমন প্রশ্নেন জবাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরসেদুল আলম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালে আসছে এসব কয়লা।
তিনি জানান, কয়লা ব্যবহারে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য এখানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আছে শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। কয়লাবাহী জাহাজ সরাসরি টার্মিনালে ভেড়ানোর পর ওই জাহাজ থেকেই সরাসরি কনভেয়ারের মাধ্যমে কোল্ড ডোরে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখানেই মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া চলছে। যে কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের সুযোগ নেই।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৩তম আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশ। জ্বালানি সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব ক্লিন কোল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দক্ষতা ৪৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।
সালফার নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন (এফজিডি) স্থাপন করা হয়েছে। ফ্লাই অ্যাশ কমাতে ৯৯ শতাংশ দক্ষতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রো স্ট্যাটিক প্রেসিপিটেটর (ইএসপি) বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোজিত হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক শাহ্ আব্দুল মওলা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন সাড়ে ৬ হাজার টন কয়লা দরকার। তবে রাবনাবাদ চ্যানেলে নাব্যতার কারণে মাদার ভ্যাসেল সরাসরি আমাদের জেটিতে ভিড়তে না পারায় সমস্যা হচ্ছে। ২০২০ সালে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করায় মাত্র সাতটি মাদার ভ্যাসেল সরাসরি আমাদের জেটিতে ভিড়তে পেরেছিল। যেগুলোর ধারণ ক্ষমতা ছিল ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টন। এরপর ড্রেজিং না হওয়ায় ছোট ছোট ভ্যাসেলে করে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন কয়লা বহন করতে হয়েছে।
বর্তমানে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ রাবনাবাদ চ্যানেলে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করায় পুনরায় আশার আলো দেখছেন তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় দেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের। পরে ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগের চুক্তির পর ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। মূল কাজের পুরো তদারকি করেছেন চীনের ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এসএন