স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হাতাহাতি, ৩ আওয়ামী লীগ নেতা বহিষ্কার
বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ৩ নেতাকে সাময়িকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা চলাকালীন এ ঘটনা ঘঠেছে। পরে দুপুরে অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়টি উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পলাশ, শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রিয়াজুল ইসলাম কাজী এবং বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য জসিম উদ্দিন রুবেল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মারামারির ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। পরে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িকভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উজিরপুর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উজিরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম তালুকদার। এসময় প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হলে তার সঙ্গে উপস্থিত হন উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উজিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান এবং একই কমিটির সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস সরদারসহ একাধিক নেতা-কর্মী। এসময় সংসদ সদস্য হাফিজুর রহমানের সামনে ইদ্রিস সরদারকে কটূক্তি করে অশালীন মন্তব্য করায় ইদ্রিস তার প্রতিবাদ করে। পরে হাফিজুর রহমান ও তার নেতা-কর্মীরা ইদ্রিসের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর শুরু করেন বলে জানা গেছে। এতে মো. হাফিজুর রহমান এবং মো. ইদ্রিস সরদার আহত হন। পরে তাদের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মো. ইদ্রিস সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘সংসদ সদস্যের সামনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান আমাকে নিয়ে কটূক্তি ও অশালীন মন্তব্য করে। আমি তার কথার প্রতিবাদ করলে হাফিজুর রহমান এবং তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৭-৮ জন আমার উপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মারামারির ঘটনা, সংসদ সদস্য এবং তার সামনে ঘটেনি বলে জানান অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান।
উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারী বলেন, দল থেকে সাময়িকভাবে তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহকে অবহিত করা হয়ে। তিনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ বিষয়ে জানতে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলমের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান বলেন, উপজেলা পরিষদের মাঠে অনুষ্ঠানে ফুল দেওয়ার পরে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যারা অছেন তারা বিষয়টি মিটমাট করেছে বলে জানিয়েছেন। আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এসজি