'শেবাচিমের ফ্লোরে পা ফেলার জায়গা নেই'
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক-এমপি বলেছেন, হাসপাতালে রোগী বেশি, ফলে ফ্লোরে পা ফেলার জায়গা নেই। নতুন ভবনে মেডিসিন ইউনিট নেয়া হয়েছে, তারপরও সেখানে দেখলাম করিডোরে-বারান্দায় অনেক রোগী।
আর পূরাতন ভবনেও তো অনেক রোগী, যেখানে ফ্লোরেও রোগী রয়েছে। তবে দেশের ৮ ডিভিশনে পুরোনা হাসপাতালের প্রত্যেকটিতে ১ হাজার বেড বৃদ্ধির পরিকল্পনা আমরা হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে যা বুঝলাম তাতে এখানে ১ হাজার বেডেও কাজ হবে না, আরও বেশি লাগবে। সেইসঙ্গে পূরাতন অবকাঠামো দিয়েও চলবে না, নতুন অবকাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।
বৃহষ্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে নির্মানাধীন শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতাল, বিভাগীয় ক্যান্সার হাসপাতাল এবং শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দেশের প্রত্যেকটা রোগী বেডে থেকে স্ব-সন্মানে চিকিৎসা নিবে। এটাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার, নির্দেশনা, ইচ্ছে ও আশা। আমরা সেই চেষ্টা করছি। শের ই বাংলা হাসপাতালের পূরোনা ভবনের ফ্লোর ও দেয়াল ঠিক নেই। ৫৫-৬০ বছর হয়ে গেছে ভবনের বয়স, ফলে এখানে অবকাঠামোর খুবই অবনতি হয়েছে। আমি মনে করি এখানে নতুন অবকাঠামো হওয়া প্রয়োজন।
পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর ও বিভিন্ন হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বরিশালে সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের জন্য নির্মানাধীন অবকাঠামো (ভবন) এর কাজের অগ্রগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।
অন্যদিকে শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতাল ভবন নির্মানকাজে শেষ হতে বিলম্ব হওয়া নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাই বর্ধিত নির্ধারিত সময় চলতি বছরের জুনের মধ্যে হাসপাতাল ভবনটির নির্মান কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের। এরপররই হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রী শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতালের ভবন নির্মান কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকৌশলীরা জানান, ২০১৭ সালে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মান কাজ শুরু হয় এবং ২০১৯ সালে এর নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে করোনাসহ নানান কারনে এর নির্মান কাজ এখনও শেষ হয়নি। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে ভবনটি হস্তান্তর করার কাজ এগিয়ে চলছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু মন্ত্রীকে জানান, প্রথমে জমি অধিগ্রহন প্রকৃয়ার কারনে নির্মান কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়েছে, পরে পুকুর ভরাটসহ নানান সমস্যা সমাধানে একবছর শেষ হয়ে গেছে। অন্যদিকে ভবনে ফাটল ধরায় পাইল ড্রাইভের প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়েছে। তবে বর্তমান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা জানান তিনি।
পরবর্তীতে বান্দরোড সংলগ্ন সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের জন্য নির্মানাধীন অবকাঠামো (ভবন) এর কাজ পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ক্যান্সার হাসপাতালের নির্মান কাজের গতি একটু স্লো। আর একটু প্রগেস হওয়ার দরকার ছিলো। আমরা পিডব্লিউডিকে বলেছি, যাতে কাজটি আরও অগ্রগতি লাভ করে এবং টার্গেট সময়ের মধ্যে যেন কাজটি শেষ করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ হুমায়ুন শাহীন খান, জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মারিয়া হাসানসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও পিডব্লিউডি এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এএজেড