নিষেধাজ্ঞার ১৪ দিনেও চাল পাননি জেলেরা

গত ৭ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবে নিষেধাজ্ঞার ১৪ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো সরকারের বরাদ্দকৃত চাল পাননি উপকূলীয় বরগুনার অনেক জেলেরা। ফলে পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একদিকে প্রশাসনের অভিযান চলছে। অন্যদিকে জেলেরা ক্ষুধার তাড়নায় নদীতে জাল ফেলছেন। এ কারণে গত ১৩ দিনে পেটের দায়ে মৎস্য আহরণে নদীতে নেমে বহু জেলে কারাদণ্ডের স্বীকার হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক জাল এবং ইলিশ জব্দও করা হয়েছে।
জেলেরা জানান, অন্য কোনো পেশায় সুযোগ না থাকায় অবরোধের এই সময়টায় বাধ্য হয়ে অনেক জেলে বেকার বসে আছেন। আবার কেউ কেউ নৌকা, ট্রলার এবং জাল মেরামত করছেন।
জেলার ছয় উপজেলার জেলে অধ্যুষিত এলাকাগুলো ঘুরে অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনো চাল পৌঁছায়নি তাদের ঘরে। ফলে অনেকেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই জাল নিয়ে নদীতে নামছেন।
বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের নিবন্ধিত ইলিশ শিকারি জেলে মো. ফারুক শরিফ ও মো. ফিরোজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গতবারের নিষেধাজ্ঞার চালই এখনো পাইনি। এবারের চাল কবে পাব জানি না। আমরা ধার-দেনায় জর্জরিত। মাছ ধরতে না পারলে দেনা পরিশোধ করব কী দিয়ে। ঘরে সদায় যা ছিল শেষ, এখন কী খাব? দুই সপ্তাহ গেলেও সরকারের কাছ থেকে কিছুই পাইনি।
মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, বেতাগীতে নিবন্ধিত ইলিশ শিকারি জেলে রয়েছেন ৩ হাজার ১০০ জন। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যেন নদীতে ইলিশ শিকারে না যান সেজন্য প্রতিটি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে ৩ হাজার ১০০ জন জেলকে ৭৭.৫ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে জেলে প্রতি ২৫ কেজি করে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে বেতাগীতে ৩ হাজার ১০০ জন জেলের জন্য ৭৭.৫ মেট্রিক টন বরাদ্দের চাল এসেছে। তবে নিষেধাজ্ঞার ১৩ দিন পার হলেও এখনো জেলেদের মাঝে সেই চাল বিতরণ করতে পারেনি মৎস্য অধিদপ্তর।
মোকামিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জালাল আহমেদ বলেন, জেলেদের জন্য বরাদ্দের চালের চিঠি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমারা জেলেদের তালিকা প্রস্তুত করেছি। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চাল বিতরণ শুরু করতে পারব।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফফার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে চালের ডিও দেওয়া হয়েছে। আমি তাদের চাল দেওয়ার জন্য বারবার বলছি। তারা চাল বিতরণ কবে শুরু করবে আমাকে এখনো জানায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে জেলেরা যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে না থাকে সেজন্য প্রতিটি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।
এসজি
